ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর পুলিশ সংস্কার: চুক্তি বাতিলের পথে, তোলপাড়!

মার্কিন বিচার বিভাগ, যা বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে রয়েছে, তারা মিনিয়াপলিস এবং লুইসভিলের পুলিশ বিভাগের সঙ্গে হওয়া সংস্কার চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জর্জ ফ্লয়েড এবং ব্রেয়োনা টেইলরের মৃত্যুর পর দেশব্যাপী বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, যার ফলস্বরূপ এই চুক্তিগুলো হয়েছিল।

বিচার বিভাগ আরও ছয়টি পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের তদন্তের ফলাফলও প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেলের সহকারী হারমিত ধিলন সাংবাদিকদের বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে বিচার বিভাগের নাগরিক অধিকার বিভাগের ধারণা হল, স্থানীয় পুলিশ বিভাগের বিষয়ে ফেডারেল হস্তক্ষেপ ব্যতিক্রমী হওয়া উচিত, কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়।

তিনি আরও যোগ করেন, “পুলিশিং নীতি, নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, পদোন্নতি এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলি স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, যেখানে স্থানীয় জবাবদিহিতা এবং অর্থ ও নীতি নির্ধারণের ক্ষমতা থাকে।

২০২০ সালের গ্রীষ্মকালে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার ঘটনা সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ডেরেক শভিন নামের এক পুলিশ সদস্য ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে প্রায় নয় মিনিটের বেশি সময় ধরে চেপে ধরেছিল, যার ফলস্বরূপ ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার জেরে আমেরিকাজুড়ে বর্ণবাদ ও পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়।

মিনিয়াপলিসের ঘটনার পরে, বিচার বিভাগের একটি তীব্র প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, শহরটি ফেডারেল সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়। এর মাধ্যমে আদালতের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ এবং শক্তি প্রয়োগের নীতিগুলো সংস্কারের কথা ছিল। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর এই বিষয়ে কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে।

তবে মিনিয়াপলিসের পুলিশ প্রধান ব্রায়ান ও’হারা এক সংবাদ সম্মেলনে জোর দিয়ে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে, তারা ফেডারেল চুক্তির শর্তাবলী মেনে চলবে।

অন্যদিকে, কেন্টাকির লুইসভিল শহরেও ব্রেয়োনা টেইলরকে গুলি করে হত্যা এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের আচরণের কারণে পুলিশ বিভাগের সংস্কারের জন্য বিচার বিভাগের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছিল। লুইসভিলের মেয়র ক্রেগ গ্রিনবার্গ জানিয়েছেন, শহরটি পুলিশ সংস্কারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।

এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল পুলিশ বিভাগের কাজকর্মকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করা। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে সংস্কারের পথে কিছুটা হলেও বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, শহর দুটি তাদের সংস্কারের প্রতিশ্রুতি কীভাবে রক্ষা করে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *