যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি কেতানজি ব্রাউন জ্যাকসন, যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে আলোচনায় এসেছেন। এই সুপ্রিম কোর্ট হলো আমেরিকার সর্বোচ্চ আদালত, যা দেশটির সংবিধান ও আইনের ব্যাখ্যা করে।
সম্প্রতি, বিচার বিভাগের এই গুরুত্বপূর্ণ পদে তার ভিন্নমতের কারণে তিনি বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করছেন। বিচারপতি জ্যাকসন জো বাইডেনের আমলে এই পদে যোগদান করেন এবং সেই থেকে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তার নিজস্ব মতামত রেখেছেন।
তার স্পষ্টভাষিতা ও নির্ভীক মনোভাব প্রায়ই দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যা অনেক সময় আদালতের অন্যান্য বিচারপতিদের থেকে ভিন্ন। বিশেষ করে, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিমালার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তার ভিন্নমত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
সম্প্রতি, ফেডারেল সরকারের আকার হ্রাস করার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতি জ্যাকসন তার ভিন্নমত প্রকাশ করেন। তিনি এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন যে, আদালত এই মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা “দুর্ভাগ্যজনক, অহংকারী এবং অর্থহীন”।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি যে তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ করেছেন, তা তার স্পষ্টবাদী মানসিকতার প্রমাণ। এই মামলার প্রেক্ষাপটে, ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা ছিল সরকারি বিভিন্ন বিভাগের আকার কমানো।
কিন্তু বিচারপতি জ্যাকসন মনে করেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের ক্ষমতাকে খর্ব করে। এছাড়াও, বিচারপতি জ্যাকসন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার মতামত দিয়েছেন, যা সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তিনি জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অবসান ঘটানোর চেষ্টা এবং পরিকল্পিত পরিবার পরিকল্পনা (Planned Parenthood)-এর তহবিল বন্ধ করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। তার মতে, এই ধরনের সিদ্ধান্তগুলো সমাজের দুর্বল ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে।
বিচারপতি জ্যাকসন শুধু একজন ভিন্নমতাবলম্বীই নন, তিনি আদালতের সবচেয়ে সক্রিয় বিচারপতিদের মধ্যে অন্যতম। গত মেয়াদে তিনি ২৪টি রায় লিখেছেন, যা তার কাজের গভীরতা ও গুরুত্বের প্রমাণ।
বিচারপতি জ্যাকসনের এই ভূমিকা মার্কিন বিচার বিভাগে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তার স্পষ্টভাষীতা এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিজস্ব মতামত প্রদানের মাধ্যমে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন।
এই কারণে, তার কার্যক্রম শুধু আমেরিকাতেই নয়, বিশ্বজুড়েও আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। তথ্য সূত্র: সিএনএন