ক্যানটারবেরির প্রাক্তন আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি, সিরিয়াল যৌন নির্যাতনকারী জন স্মিথকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই কথা জানান।
এই ঘটনার জেরে তিনি অ্যাংলিকান চার্চের প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।
জন স্মিথ ছিলেন একজন প্রভাবশালী আইনজীবী, যিনি ২০১৮ সালে মারা যান। অভিযোগ রয়েছে, প্রায় ১৩০ জন বালকের ওপর তিনি যৌন নির্যাতন চালিয়েছিলেন।
ওয়েলবি’র পদত্যাগের কারণ ছিল, স্মিথের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তিনি সেভাবে গুরুত্ব দেননি এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
সাক্ষাৎকারে ওয়েলবিকে যখন স্মিথকে ক্ষমা করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, তখন তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। তবে, তিনি তো আমাকে নির্যাতন করেননি, নির্যাতন করেছেন ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের।
তাই আমি ক্ষমা করলাম নাকি করলাম না, সেটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
ওয়েলবি’র এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, স্মিথের নির্যাতনের শিকার হওয়া এক ব্যক্তি বিবিসিকে জানান, “১৩ বছর আগে আমি মুখ খুলেছিলাম, কিন্তু চার্চ আমাকে যে অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে নিয়ে গেছে, তা অতীতের নির্যাতনের ঘটনাকে তুচ্ছ করে দেয়।
সঠিক জবাব পাওয়ার জন্য আমি এক কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছি। স্মিথকে নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই।”
একটি স্বাধীন তদন্তে দেখা গেছে, এক দশক আগে যদি আর্চবিশপ স্মিথের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতেন, তাহলে হয়তো তাকে বিচারের আওতায় আনা যেত।
তবে, ওয়েলবি প্রথমে পদত্যাগ করতে রাজি হননি। পরে সমালোচনার মুখে তিনি পদত্যাগ করেন।
সাক্ষাৎকারে ওয়েলবি আরও জানান, পদত্যাগের ঘোষণার পর হাউস অফ লর্ডসে দেওয়া তার একটি বক্তৃতার কথা মনে পড়লে তিনি আজও লজ্জিত হন।
সেই বক্তৃতায় তিনি মজা করে বলেছিলেন, যারা তার ডায়েরি সেক্রেটারিকে নিয়ে সহানুভূতি দেখাচ্ছেন, তাদের প্রতি তার দুর্বলতা রয়েছে।
কারণ, তার সেক্রেটারিকে কয়েক সপ্তাহ, এমনকি মাসের পর মাস ধরে কাজ করতে হয়েছে, যা কিনা তার পদত্যাগের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই যেন বাতাসে মিলিয়ে গিয়েছিল। তার এই মন্তব্যের জেরে অনেকে আহত হয়েছিলেন।
ওয়েলবি স্বীকার করেন, ওই সময়ে তিনি ভালো মানসিক অবস্থায় ছিলেন না এবং তার ওই ধরনের কথা বলা উচিত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, “আমি গভীরভাবে লজ্জিত এবং ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আমি ক্ষমা চেয়েছিলাম, যা আমি এখনও মনে করি।”
তিনি আরও জানান, চার্চের মধ্যে নির্যাতনের ঘটনাগুলি তিনি হয়তো সেভাবে দেখতে পাননি কারণ, প্রতিদিন তার কাছে এমন অনেক অভিযোগ আসছিল, যেগুলোর যথাযথ সমাধান করা হয়নি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান