চেচেন নেতা রামজান কাদিরভের পদত্যাগ করার ইচ্ছার গুঞ্জন উঠেছে। অনেকের মতে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চান না কাদিরভের উত্তরসূরি হিসেবে আসুক তার ছেলে।
সম্প্রতি কাদিরভের স্বাস্থ্য নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে, আল জাজিরার সূত্রে জানা গেছে কাদিরভ পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন, নাকি অন্য কিছু?
জানা যায়, কাদিরভ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজের পদত্যাগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এমনকি তিনি প্রকাশ্যে এমনটাও বলেছিলেন যে, তিনি চান অন্য কেউ এসে চেচনিয়ার নেতৃত্ব দিক এবং নিজের মতো করে কাজ করুক।
তবে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর কাদিরভের অবস্থান অনেকটাই নরম হয়ে আসে। তিনি পরে জানান, তিনি তো একজন অনুগত সৈনিক মাত্র, আর তার উপর যিনি, সেই সুপ্রিম কমান্ডার যা বলবেন, তিনি তাই করবেন।
এই ঘটনার পেছনের কারণ হিসেবে জানা যায়, কাদিরভ সম্ভবত তার উত্তরসূরি হিসেবে নিজের ছেলে, আদাম কাদিরভকে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুতিন নাকি এতে রাজি নন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানায়, পুতিন আদামকে কাদিরভের স্থলাভিষিক্ত করতে চান না। আদামের বয়স এখন সতেরো বছর।
এছাড়াও, কাদিরভের স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক কথা শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, কাদিরভ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ বলেও শোনা যাচ্ছে। তিনি সম্ভবত নেক্রোটাইজিং প্যানক্রিয়েটাইটিস এবং কিডনি জটিলতায় ভুগছেন, যার কারণে তাকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হয়।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, কাদিরভকে বেশ কয়েকবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। এমনকি, তিনি দিনের বেশিরভাগ সময় গ্রোজনির একটি ক্লিনিকে কাটান।
কাদিরভের এমন শারীরিক অবস্থার কারণে তিনি রাষ্ট্রীয় অনেক অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে পারছেন না। এমনকি, পবিত্র রমজান মাসের শেষে চেচেনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে টিভিতে যে ভাষণ দেওয়ার রীতি ছিল, এবার তিনি সেই অনুষ্ঠানেও ছিলেন না।
এছাড়াও, ১৯৪৪ সালে স্তালিনের আমলে চেচেনদের নির্বাসনের বার্ষিকীতেও তাকে দেখা যায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কাদিরভের মৃত্যুর পর চেচনিয়ার শাসন ক্ষমতায় খুব একটা পরিবর্তন আসবে না। তবে, নতুন যিনি আসবেন, তিনি হয়তো কাদিরভের ভাবমূর্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে জনগণের কাছে একজন সংস্কারক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করতে পারেন।
বর্তমানে ক্রেমলিনের পছন্দের উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে আপ্তি আলাউদ্দিনভকে, যিনি বর্তমানে চেচনিয়ার একজন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা