ব্রিটিশ-ক্যাম্বোডিয়ান লেখিকা কালিয়ানে ব্র্যাডলি’র প্রথম উপন্যাস ‘দ্য মিনিস্ট্রি অফ টাইম’ (The Ministry of Time) নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে।
সময়ের প্রেক্ষাপটে লেখা এই উপন্যাসে লেখক সময়ের ফেরে একবিংশ শতাব্দীতে আসা এক ব্যক্তির গল্প বলেছেন, যিনি আঠারো শতকের আর্কটিক অভিযানের একজন নাবিক।
বিবিসির পক্ষ থেকে এই উপন্যাস অবলম্বনে একটি টিভি সিরিজ নির্মাণেরও ঘোষণা করা হয়েছে।
কালিয়ানে ব্র্যাডলি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে বসবাস করেন এবং পেশায় তিনি একজন সম্পাদক।
তাঁর এই উপন্যাসটি ২০২৩ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর বেশ প্রশংসিত হয়েছে এবং বেস্টসেলার তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছে।
এই উপন্যাসে ১৮৪৫ সালের ফ্রাঙ্কলিন আর্কটিক অভিযানের নাবিক লেফটেন্যান্ট গ্রাহাম গোরকে ভবিষ্যতের পৃথিবীতে নিয়ে আসা হয়।
এরপর আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তাঁর এক ‘বন্ধু’র (ব্রিজ) প্রয়োজন হয়, যিনি তাকে সাহায্য করেন।
উপন্যাসটি লেখার অনুপ্রেরণা সম্পর্কে বলতে গিয়ে কালিয়ানে জানান, ২০২১ সালে ‘দ্য টেরর’ নামের একটি টিভি সিরিজ দেখার পর তাঁর আর্কটিক অভিযান নিয়ে আগ্রহ জন্মে।
এরপর ফ্রাঙ্কলিনের অভিযানের চরিত্রগুলো নিয়ে তিনি পড়াশোনা শুরু করেন।
বিশেষ করে গ্রাহাম গোর চরিত্রটি তাঁকে আকৃষ্ট করে।
অনলাইনে এই বিষয়ে কিছু মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর তিনি তাঁদের জন্য এই উপন্যাসটি লেখার সিদ্ধান্ত নেন।
লেখকের মতে, গ্রাহাম গোরের ছবিতে তাঁকে সুদর্শন লেগেছিল এবং মানুষটি ছিলেন শান্ত ও দৃঢ়চেতা।
উপন্যাসটিতে সময়কে অভিবাসন এবং উদ্বাস্তু জীবনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
লেখকের ভাষ্যমতে, একজন মানুষ যখন ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একবিংশ শতাব্দীতে আসে, তখন তার অভিজ্ঞতা অনেকটা শরণার্থীর মতো হয়।
এর আগে তিনি কম্বোডিয়া এবং সেখানকার খেমার রুজ নিয়ে একটি উপন্যাস লেখার চেষ্টা করেছিলেন।
ব্র্যাডলি তাঁর লেখক জীবনের ওপর বৌদ্ধধর্মের প্রভাব সম্পর্কেও কথা বলেছেন।
লেখিকা তাঁর নিজের জাতিগত পরিচয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, এটি তাঁর মা এবং পরিবারের সঙ্গে একটি সম্পর্ক।
তিনি নিজেকে একজন ব্রিটিশ-ক্যাম্বোডিয়ান লেখক হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
তাঁর মতে, এই পরিচয় তাঁর লেখার ধরনে প্রভাব ফেলেছে।
প্রকাশের আগে তিনি ছদ্মনাম ব্যবহারের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর পরিচিতজনদের সাহায্য ছাড়াই কাজটি কতটা ভালো হয়েছে, তা যাচাই করতে।
এছাড়া, তিনি আশঙ্কা করেছিলেন, পরিচিতরা বইটি পড়ে সমালোচনা করতে পারেন।
উপন্যাসটির সাফল্যের পর ব্র্যাডলি বর্তমানে তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস নিয়ে কাজ করছেন।
এটি একটি বাতিঘরকে কেন্দ্র করে লেখা, যা জীবিত এবং মৃতের জগতের মাঝে অবস্থিত।
তাঁর নতুন উপন্যাসের গল্পটিও বেশ আকর্ষণীয় হতে যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান