ক্ষমতা ছাড়ার পরেই ট্রাম্পকে তীব্র আক্রমণ কমলা হ্যারিসের

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রমের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, ট্রাম্পের নীতিগুলি আমেরিকার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছে।

বুধবার সান ফ্রান্সিসকোতে ‘এমার্জ গালা’ অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন। এই অনুষ্ঠানে নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করার জন্য কাজ করা একটি সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

হ্যারিস, ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক নীতির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অস্থিরতাকে “সর্বকালের বৃহত্তম মানবসৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট” হিসেবে অভিহিত করেন।

তিনি সতর্ক করে বলেন, আদালতের সঙ্গে ট্রাম্পের বিরোধ “সাংবিধানিক সংকটের” দিকে দেশকে ঠেলে দিচ্ছে।

হ্যারিসের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া এই শুল্ক নীতি শ্রমিক ও পরিবারগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়াবে এবং মানুষের সঞ্চয়ে আঘাত হানবে।

তিনি আরও বলেন, এই শুল্কের কারণে আমেরিকান ব্যবসাগুলোও ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং তাদের কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হতে পারে।

ভাষণে হ্যারিস বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলি একটি বৃহত্তর রক্ষণশীল প্রকল্পের অংশ।

তিনি ডেমোক্র্যাটদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং বিভেদ সৃষ্টির যেকোনো চেষ্টা থেকে দূরে থাকতে বলেন।

হ্যারিস এমন এক সময়ে এই ভাষণ দিলেন, যখন ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ডেমোক্রেটরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে।

তিনি সম্ভবত ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন অথবা ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের পদে লড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হ্যারিসের এই ভাষণ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।

এর মাধ্যমে তিনি একদিকে যেমন ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন, তেমনই নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তিনি ডেমোক্রেট দলের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য।

হ্যারিস বিভিন্ন দলের আইনপ্রণেতাদের নাম উল্লেখ করেন, যারা বিভিন্ন ইস্যুতে “নৈতিকভাবে” কথা বলছেন।

তিনি নিউ জার্সির সিনেটর কোরি বুকার, মেরিল্যান্ডের সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন, কানেকটিকাটের সিনেটর ক্রিস মারফি, টেক্সাসের প্রতিনিধি জ্যাসমিন ক্রকেট, ফ্লোরিডার প্রতিনিধি ম্যাক্সওয়েল ফ্রস্ট, নিউ ইয়র্কের প্রতিনিধি অ্যালেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ এবং ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

ভাষণে হ্যারিস স্পষ্টভাবে বলেন, পরিস্থিতি হয়তো আরও খারাপ হতে পারে, তবে তাঁরা সবাই এর জন্য প্রস্তুত আছেন।

তিনি বলেন, “আমরা ছত্রভঙ্গ হবো না, বরং সবাই মিলে একসঙ্গে থাকব।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হ্যারিসের এই ভাষণ দেওয়ার মাধ্যমে তিনি ধীরে ধীরে জনসমক্ষে ফিরছেন।

আগামী মঙ্গলবার নিউইয়র্ক সিটিতে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির জন্য একটি তহবিল সংগ্রহেরও কথা রয়েছে তাঁর।

এছাড়াও, তিনি বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির সমালোচনা করে আসছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *