কামালা হ্যারিস: ভবিষ্যতের পথ খুঁজছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বর্তমানে তাঁর নতুন বই, “১০৭ দিন” -এর প্রচারের জন্য বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করছেন। বইটিতে তিনি গত নির্বাচনে তাঁর প্রচারণার অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক তুলে ধরেছেন।
তাঁর এই কার্যক্রম ঘিরে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে, যা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বইটি প্রকাশের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও তাঁর সমালোচকেরা ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য করেছেন। অনেকে মনে করছেন, হ্যারিসের এই বই লেখার উদ্দেশ্য হলো ২০২৪ সালের নির্বাচনের বিষয়গুলো নতুন করে আলোচনা করা।
তবে, তাঁর দলের কিছু সদস্য মনে করেন, এই ধরনের আলোচনা এখন অপ্রয়োজনীয়। বইটিতে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্পর্কে কিছু মন্তব্যের কারণেও অনেকে অসন্তুষ্ট হয়েছেন।
অন্যদিকে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদ্রূপ করে বইটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জেডি ভ্যান্সের মতে, হ্যারিসের আরও বেশি দিন প্রচারের সুযোগ থাকলে, তিনি আরও বেশি ভোটে পরাজিত হতেন।
কমলা হ্যারিস অবশ্য বিষয়টিকে অন্যভাবে দেখছেন। তিনি মনে করেন, বইটির মাধ্যমে তিনি অতীতের স্মৃতিগুলো একত্রিত করে বর্তমানকে বুঝতে এবং ভবিষ্যতের পথ খুঁজে বের করতে চাইছেন।
তিনি বলেন, এই বই লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো, অতীতের প্রেক্ষাপটে বর্তমানকে মূল্যায়ন করা এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি দিকনির্দেশনা তৈরি করা।
হ্যারিস বর্তমানে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছেন। কিভাবে ডেমোক্রেটদের মধ্যে তাঁর কণ্ঠস্বর আরও জোরালো করা যায়, সেই চেষ্টা করছেন তিনি।
তিনি মনে করেন, আমেরিকার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার অভাব দেখা যাচ্ছে এবং এই পরিস্থিতিতে কিভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা যায়, সে বিষয়ে তিনি মনোযোগ দিচ্ছেন।
রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন ধরনের হুমকির সম্মুখীন হওয়া প্রসঙ্গে হ্যারিস বলেন, “আমি ভীত নই।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি এমন একটি সমাজ গড়তে চাই যেখানে মানুষ একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হবে।”
বইটি নিয়ে ডেমোক্রেটদের সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের নিজেদের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে হবে, যারা আমাদের মতো একই বিষয় নিয়ে চিন্তা করে না।”
হ্যারিস তাঁর বইটিকে একটি “জার্নাল” হিসেবে উল্লেখ করেন, যেখানে তিনি প্রচারণার প্রতিটি দিনের অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করেছেন।
বইটিতে বাইডেন সম্পর্কে কিছু মন্তব্যের কারণে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। হ্যারিস বলেছেন, তিনি বাইডেনের বয়স এবং পুনরায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
যদিও তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো আছে বলেই তিনি উল্লেখ করেন।
প্রচারণার সময়কালে বিভিন্ন স্থানে হ্যারিসের বক্তৃতাগুলোতে তাঁর অনুসারীদের মধ্যে এক ধরনের আবেগ তৈরি হয়েছে। তাঁর বক্তব্যে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়।
তিনি বলেন, “আমরা প্রায়ই এমন পরিস্থিতির জন্য ভাষা খুঁজে পাই না, কারণ ‘ক্ষয়’ শব্দটি আসলে যা ঘটছে তা সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করতে পারে না। সম্ভবত ‘ধ্বংস’ শব্দটি সবচেয়ে কাছাকাছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়, হতাশায় ডুবে থাকার মতো বিলাসিতা আমার নেই।”
বর্তমানে হ্যারিস তাঁর ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণের চেষ্টা করছেন। তিনি মনে করেন, আমেরিকার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার অভাব দেখা যাচ্ছে এবং এই পরিস্থিতিতে কিভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা যায়, সে বিষয়ে তিনি মনোযোগ দিচ্ছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন