যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে ১৯৮৭ সালে নিখোঁজ হওয়া এক নারীর কঙ্কাল এবং মাথার খুলি সনাক্ত করা হয়েছে, যা সম্প্রতি ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, কেই জোসেফিন মেদিন নামের ওই নারী ঘটনার কয়েক দশক আগে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন। স্থানীয় পুলিশ বর্তমানে এই ঘটনার তদন্ত করছে এবং জনসাধারণের কাছ থেকে কোনো তথ্য পেলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
১৯৮৭ সালের ৩রা আগস্ট, ক্যালিফোর্নিয়ার হাইয়াম্পম এলাকা থেকে ৪৮ বছর বয়সী কেই জোসেফিন মেদিন নামের এক নারীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। তাঁর স্বামী নিকোলাস মেদিন, যিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন, ব্যবসার কাজে বাইরে গিয়েছিলেন।
ফিরে এসে তিনি স্ত্রীকে খুঁজে পাননি। এরপর তিনি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানান।
তদন্তকারীরা মেদিনের বাড়ি এবং আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্থানীয় শেরিফের কার্যালয়, বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কোনো সূত্র খুঁজে পায়নি।
ঘটনার কিছু দিন পর, ১৯৮৭ সালের ২৫শে নভেম্বর হামবোল্ট কাউন্টি শেরিফের কার্যালয়ে একটি পার্সেল আসে, যেখানে কেই মেদিনের কঙ্কাল ছিল। পার্সেলের সাথে পাওয়া একটি বেনামী চিঠিতে আরও কিছু দেহাবশেষের সম্ভাব্য স্থান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছিল।
চিঠিতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা অ্যামন রিজ রোডের কাছে আরও কিছু দেহাবশেষ উদ্ধার করেন। এরপর ডেন্টাল রেকর্ড ব্যবহার করে কেই মেদিনের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।
১৯৮৮ সালে তাঁর মৃত্যুর সনদও ইস্যু করা হয়।
এই ঘটনার তদন্ত চলাকালে, ১৯৯৩ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ত্রিনিদাদ হেড সমুদ্র সৈকতের কাছে একটি মাথার খুলি পাওয়া যায়। পরে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ক্যালিফোর্নিয়ার মিসিং পারসন ডিএনএ ডাটাবেজে জমা দেওয়া হয়।
তবে প্রথমে সেটির সঙ্গে কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
অবশেষে, হামবোল্ট কাউন্টি শেরিফের কার্যালয় কেই মেদিনের মাথার খুলি সনাক্তকরণের জন্য একটি বেসরকারি ফরেনসিক ল্যাব, ওথ্রাম ইনক-এর সহায়তা নেয়। তারা জেনেটিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিশ্চিত করে যে, মাথার খুলিটি কেই মেদিনের।
এরপর তদন্তকারীরা কেই মেদিনের মেয়ের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে, ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস-এর পরীক্ষায়ও তা প্রমাণিত হয়।
এই ঘটনার তদন্ত এখনো চলছে এবং হামবোল্ট কাউন্টি শেরিফের অফিসের কর্মকর্তারা জনসাধারণের কাছ থেকে কোনো তথ্য পেলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, যদি কারও কাছে এই ঘটনা সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকে, তবে তারা যেন এগিয়ে আসে এবং তাদের সহায়তা করে। এই বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য (707-441-3024) নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কেই মেদিনের স্বামী নিকোলাস মেদিন ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে মারা যান।
তথ্য সূত্র: পিপলস