প্রেমিকের মৃত্যু: কারেন রিডের মামলায় কি রায়? আদালতে উত্তেজনার পারদ!

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহরে বহুল আলোচিত একটি মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। পুলিশ অফিসার জন ও’কীফকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত কারেন রিডের বিরুদ্ধে পুনরায় বিচারকার্য চলছে এবং এতে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক প্রায় শেষের দিকে।

সম্প্রতি, কারেন রিডের আইনজীবীরা তাদের পক্ষে মামলা শেষ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী শুক্রবার বিচারক বেভারলি ক্যানোনের তত্ত্বাবধানে চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক শুরু হবে এবং এরপরই জুরিদের আলোচনা শুরু হবে।

২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে, ম্যাসাচুসেটসের কানটনে জন ও’কীফ নামের ওই পুলিশ অফিসারের মৃত্যু হয়। সরকারি কৌঁসুলিদের অভিযোগ, কারেন রিড তার এসইউভি (SUV) গাড়ি দিয়ে ও’কীফকে আঘাত করেন এবং পরে তাকে সেখানেই ফেলে রেখে যান।

তারা বলছেন, ঘটনার সময় রিড তার গাড়ি ব্যাক করছিলেন। অন্যদিকে, রিডের আইনজীবীরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তাদের দাবি, ও’কীফকে অন্য কেউ খুন করেছে এবং এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

আদালতে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা ফরেনসিক প্রমাণ এবং সাক্ষ্য-প্রমাণের ওপর জোর দিয়েছেন। সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, ঘটনার দিন রাত প্রায় সাড়ে বারোটার দিকে রিডের গাড়ি ও’কীফকে আঘাত করে।

তারা ও’কীফের ফোন এবং রিডের গাড়ির কিছু তথ্য-উপাত্ত হাজির করেছেন। এছাড়া, ঘটনাস্থল থেকে গাড়ির ভাঙা একটি লাইটের অংশও তারা সংগ্রহ করেছেন।

তাদের মতে, গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে ও’কীফ অচেতন হয়ে পড়েন এবং তুষারের মধ্যে তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে, রিডের আইনজীবীরা প্রমাণ করতে চেষ্টা করছেন যে, ও’কীফের শরীরে পাওয়া কিছু আঘাত, যেমন – হাতে কিছু কাটা দাগ, কুকুরের কামড়ের কারণে হয়েছিল।

তারা আরও দাবি করেছেন, গাড়ির যে লাইটটি ভেঙেছে, সেটি কোনো মানুষকে আঘাত করার ফলে হওয়া আঘাতের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

এই মামলার তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা মাইকেল প্রক্টর, যিনি মামলার প্রধান তদন্তকারী ছিলেন, অভিযুক্ত কারেন রিড সম্পর্কে কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন, যার কারণে তাকে পরে বরখাস্ত করা হয়।

যদিও, প্রক্টরকে আদালতে সাক্ষ্য দিতে ডাকা হয়নি। কারেন রিড নিজেও আদালতে কোনো সাক্ষ্য দেননি।

তবে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বিভিন্ন টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে রিডের দেওয়া বক্তব্য থেকে কিছু অংশ তুলে ধরেন, যেখানে তার কথার অসঙ্গতি দেখা যায়। এমনকি, তিনি একটি সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছিলেন, ‘আমি তাকে আঘাত করেছি বলে মনে করি না।

তবে, সম্ভবত আমি তাকে সামান্য ছুঁয়েছিলাম। এর ফলে, তিনি হয়তো আহত হয়ে থাকতে পারেন।’ আদালতে শুনানির পর জানা যায়, জুরিদের কাছে তার বক্তব্য পৌঁছে গেছে।

মামলার কার্যক্রম এখন সমাপ্তির দিকে এবং খুব শীঘ্রই এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *