বোস্টনের সাবেক এক শিক্ষিকা এবং আর্থিক বিশ্লেষক কারেন রিডের বিরুদ্ধে তার প্রেমিক, একজন পুলিশ অফিসারের মৃত্যুর কারণ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই মামলার শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য দিয়েছেন জেনিফার ম্যাককেব নামে এক নারী।
ম্যাককেবের সাক্ষ্য এই মামলার মোড় ঘোরাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যান্টনে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে জন ও’কিফ নামের ওই পুলিশ অফিসারের মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় রিড মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন এবং তার গাড়ির চাপায় ও’কিফের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ।
রিডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়-ডিগ্রি হত্যা, মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত সপ্তাহে আদালতে দেওয়া জেনিফার ম্যাককেবের সাক্ষ্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাককেব নিজেকে ‘সাধারণ’ পরিবারের একজন মা হিসেবে পরিচয় দেন।
ঘটনার রাতে ও’কিফের মৃত্যুর আগের মুহূর্তগুলোতে তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রসিকিউশন বা সরকারপক্ষ চাইছে ম্যাককেবকে একজন নির্ভরযোগ্য সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করতে।
অন্যদিকে, রিডের আইনজীবীরা প্রমাণ করতে চাইছেন, ম্যাককেব ও অন্যান্যরা মিলে এই হত্যারহস্য ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ম্যাককেবের ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন বন্ধুদের সঙ্গে একটি বারে সময় কাটানোর পর তারা সবাই ম্যাককেবের বোনের বাড়িতে যান। গভীর রাতে তুষারঝড়ের মধ্যে ও’কিফের খোঁজ শুরু হয়।
পরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। ম্যাককেবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার দিন সকালে ও’কিফের সঙ্গে রিডের ঝগড়া হয় এবং রিড তাকে একটি বারে ফেলে আসেন।
এরপর কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে রিডের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। ম্যাককেবের দাবি, রিড তখন বলেছিলেন, “আমি কি তাকে ধাক্কা দিয়েছিলাম? আমি কি তাকে মেরে ফেলেছি?”
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে ম্যাককেব আরও জানান, ঘটনার দিন সকালে ও’কিফের খোঁজে বের হওয়ার আগে তিনি রিডের গাড়ির পেছনের লাইটে ভাঙন দেখতে পান।
ঘটনার দিন সকালে রিডের মদ্যপানের মাত্রা কত ছিল, তা নিয়েও আদালতে কথা হয়েছে। ম্যাসাচুসেটস স্টেট পুলিশ ক্রাইম ল্যাবের ফরেনসিক বিজ্ঞানী হান্না নোলস আদালতে জানান, রিডের রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রা ছিলো ০.০৭৮ থেকে ০.০৯২ শতাংশ।
যা স্থানীয় আইনে অনুমোদিত সীমার চেয়ে বেশি।
তবে রিড শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন। তার আইনজীবীরা বলছেন, প্রসিকিউশন বা সরকারপক্ষ মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিডকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
তারা এই মামলার তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
এই মামলার রায় এখন কী হয়, সেদিকে তাকিয়ে আছে সবাই। কারণ, এই রায়ের ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন