বোস্টন শহরের উপকণ্ঠে, কান্টনে ২০২২ সালে সংঘটিত একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার বিচার এখনো চলছে। ৪৬ বছর বয়সী পুলিশ অফিসার জন ও’কীফকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে ৪৫ বছর বয়সী কারেন রিডকে।
ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা এবং ভালোবাসার গল্পে সন্দেহের ছায়া ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া।
শুরু থেকেই এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রসিকিউশন বা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, কারেন রিড তার প্রেমিক জন ও’কীফকে ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করেছেন।
ঘটনার রাতে মদ্যপানের পর কথা কাটাকাটির জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। অন্যদিকে, কারেন রিডের আইনজীবীরা দাবি করছেন, ও’কীফের মৃত্যু একটি ষড়যন্ত্রের ফল।
তারা পুলিশের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এনেছেন, যা মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।
আদালতে উত্থাপিত প্রমাণগুলো উভয় পক্ষের যুক্তিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। প্রসিকিউশন ঘটনার প্রমাণ হিসেবে কারেন রিডের গাড়ির ভাঙা লাইটের অংশ, ও’কীফের ডিএনএ এবং গাড়ির ডেটা উপস্থাপন করেছে।
তাদের মতে, ও’কীফের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা গাড়ির ধাক্কায় লেগেছে। অন্যদিকে, রিডের আইনজীবীরা বলছেন, গাড়ির লাইট ভাঙা হয় অন্য কোনো সময়ে।
এমনকি তারা এটাও প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে ও’কীফের শরীরে গাড়ির আঘাতের চিহ্ন নেই, বরং কুকুরের কামড়ের ক্ষত ছিল।
আদালতে পেশ করা হয়েছে উভয় পক্ষের সাক্ষ্য। প্রথম ট্রায়ালে প্রধান তদন্তকারী মাইকেল প্রক্টরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে।
দ্বিতীয় বিচারের সময়, প্রসিকিউশন দুর্ঘটনার স্থান থেকে পাওয়া বিভিন্ন প্রমাণ উপস্থাপন করে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ও’কীফের মোবাইল ফোনের ডেটা ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পাওয়া গেছে।
একইসাথে, রিডের গাড়ির গতি এবং অবস্থানও সেই সময় একই স্থানে ছিল।
আদালতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল কারেন রিডের একটি ভয়েসমেইল, যেখানে তিনি ও’কীফকে ঘৃণা করতেন বলে উল্লেখ করেছিলেন। প্রসিকিউশন এটিকে তাদের যুক্তির পক্ষে প্রমাণ হিসেবে দেখাচ্ছে।
তবে, রিডের আইনজীবীরা বলছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেকের আচরণে সন্দেহ রয়েছে। তারা ঘটনার রাতে একটি পার্টিতে উপস্থিত থাকা অন্যদের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এর মধ্যে একজন ফেডারেল এজেন্ট ব্রায়ান হিগিন্সের সঙ্গে রিডের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
মামলার বিচার প্রক্রিয়া এখনো চলছে এবং উভয় পক্ষের আইনজীবীরা তাদের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন।
কারেন রিডের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। এই মামলার রায় এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস