ক্যারেন রিডের মামলার সাক্ষী: দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য!

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যান্টন শহরে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে জন ও’কিফ নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত কারেন রিডের বিচার এখনো চলছে। সম্প্রতি, এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী জেনিফার ম্যাককেইব আদালতে তার সাক্ষ্য দিয়েছেন।

নিহত ও’কিফের মৃত্যুর আগের ঘটনাবলী এবং ঘটনার দিন কারেন রিডের আচরণ নিয়ে তিনি বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন।

**ঘটনার সূত্রপাত: একটি সামাজিক gathering**

২০২২ সালের ২৮শে জানুয়ারি, তুষারপাতের পূর্বাভাস ছিল। সেদিন জেনিফার ম্যাককেইব তার স্বামী এবং বোন নিকোল অ্যালবার্টের সঙ্গে ক্যান্টনের ‘দ্য ওয়াটারফল বার অ্যান্ড গ্রিল’-এ মিলিত হন।

সেখানে আরও বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে আরও অনেকে যোগ দেন, তাদের মধ্যে ছিলেন ও’কিফ এবং কারেন রিড।

ম্যাককেইবের সাক্ষ্য অনুযায়ী, ও’কিফ ছিলেন তার খুব ভালো বন্ধু। ও’কিফের এক ভাই-বোন মারা যাওয়ার পর তিনি তার ভাই-ঝি-দের দেখাশোনা করতেন।

মধ্যরাতের দিকে, সবাই অ্যালবার্টের বাড়ি, যা ৩৪ ফেইয়ারভিউ রোডে অবস্থিত, সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন। ম্যাককেইব জানান, ও’কিফ তাদের বাড়ি খুঁজে বের করার জন্য তাকে দুবার ফোন করেছিলেন।

সে রাতে একটি উৎসবের আমেজ ছিল, কারণ সেদিন ছিল ম্যাককেইবের ভাইপোর জন্মদিন। বাড়ির ভেতরে সবাই গান শুনছিল এবং হাসি-ঠাট্টা ও গল্প করছিল।

ম্যাককেইব কয়েকবার বাড়ির কাঁচের দরজা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখেন, রিডের একটি কালো এসইউভি (SUV) গাড়ি বাড়ির বাইরে পার্ক করা ছিল।

তিনি ও’কিফকে টেক্সট মেসেজ পাঠালেও কোনো উত্তর পাননি। কিছুক্ষণ পর গাড়িটি সেখান থেকে চলে যায়।

**ভোরবেলার ঘটনা ও সন্দেহ**

পরের দিন ভোর ৫টার দিকে, ও’কিফের এক আত্মীয়ের ফোন আসে ম্যাককেইবের কাছে। ফোনে তিনি শোনেন, কারেন রিড চিৎকার করে বলছেন, তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে এবং তিনি ও’কিফকে ‘দ্য ওয়াটারফল’এ রেখেই চলে এসেছেন।

রিড আরও বলেন, তার মনে নেই তিনি সেখানে ছিলেন কিনা। ম্যাককেইব জানান, রিড তাকে বলেছিলেন, ‘আমি কি তাকে ধাক্কা মেরেছি? আমি কি তাকে আঘাত করেছি?’

এমনকি রিড তার গাড়ির পেছনের বাতি ভেঙে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।

সকাল সাড়ে ৫টার দিকে, রিড ম্যাককেইবের বাড়িতে আসেন। কিছুক্ষণ পর কেরি রবার্টস নামে অপর এক মহিলাও সেখানে উপস্থিত হন।

এরপর তারা ও’কিফের খোঁজে রওনা হন, প্রথমে ও’কিফের বাড়ি যান, সেখানে তাকে না পেয়ে রবার্টসের গাড়িতে করে ফেয়ারভিউ রোডের দিকে যান।

পথে রিড “চিৎকার” করছিলেন, এবং তার আচরণ ছিল “অস্বাভাবিক”।

ফেয়ারভিউ রোডে পৌঁছানোর পর রিড চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘ঐ তো, ওখানে, আমাকে নামাও’। ম্যাককেইব জানান, তিনি তখনো পর্যন্ত কিছুই দেখতে পাননি, শুধু তুষার ছিল।

গাড়ি থেকে নামার পর রবার্টস রিডকে “পাগল” বলেন। পরে, ম্যাককেইব দেখেন রবার্টস ও’কিফের মুখ থেকে বরফ সরাচ্ছেন। ম্যাককেইব ৯১১-এ ফোন করেন, তবে ততক্ষণে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ও’কিফের মৃত্যু হয়েছে।

কারেন রিডের আইনজীবীরা দাবি করছেন, ও’কিফকে অন্য কেউ হত্যা করেছে এবং রিডকে ফাঁসানো হয়েছে।

এই মামলায় রিডের বিরুদ্ধে সেকেন্ড-ডিগ্রি মার্ডার, মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং দুর্ঘটনার পরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর আগে, এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত অচলাবস্থায় ছিল।

মামলার কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে নতুন কোনো তথ্য পাওয়া গেলে তা জানানো হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *