শিরোনাম: পুরনো দিনের হলিউড: কারিনা লংওয়ার্থের পডকাস্টে চলচ্চিত্র ইতিহাসের পুনর্জন্ম
চলচ্চিত্রের সোনালী অতীত, যা আজও অনেকের কাছে অজানা, সেই সব গল্প নিয়ে হাজির হয়েছেন কারিনা লংওয়ার্থ। তাঁর জনপ্রিয় পডকাস্ট ‘ইউ মাস্ট রিমেম্বার দিস’-এর মাধ্যমে তিনি হলিউডের প্রথম শতকের গোপন ও বিস্মৃত কাহিনিগুলো তুলে ধরেন।
সমালোচক থেকে পডকাস্টারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে লংওয়ার্থ যেন এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেস ভিত্তিক এই ইতিহাসবিদ তাঁর পডকাস্টে প্রধানত ক্লাসিক চলচ্চিত্র এবং নির্মাতাদের নিয়ে কাজ করেন। তাঁর আলোচনার বিষয়বস্তু সবসময় আধুনিক নয়, বরং পুরনো দিনের চলচ্চিত্র এবং তাদের নির্মাতা, যাদের অনেকে হয়তো কালের স্রোতে হারিয়ে গিয়েছেন।
তিনি বিশেষভাবে সেসব চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নিয়ে কাজ করেন যাদের কাজকে ‘অফ্যাশনেবল’ বা অপ্রচলিত মনে করা হয়। তাঁর মতে, অতীতের সিনেমাগুলো না দেখলে বর্তমানকে বোঝা কঠিন।
লংওয়ার্থের স্বামী, পরিচালক রিইন জনসন, সিনেমার জগতে কাজ করেন। তাই, তাঁর পডকাস্টে আধুনিক সিনেমার আলোচনা সাধারণত এড়িয়ে যাওয়া হয়, যাতে স্বার্থের সংঘাত তৈরি না হয়।
পুরনো দিনের প্রতি তাঁর এই বিশেষ আগ্রহের প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর বাড়িতে টাঙানো মার্সেল পাগনলের ১৯৩৬ সালের সিনেমা ‘সেজার’-এর পোস্টার থেকে।
তাঁর নতুন সিরিজ ‘দ্য ওল্ড ম্যান ইজ স্টিল অ্যালাইভ’-এ ১৪ জন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতার জীবনের শেষ বছরগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই সিরিজে ভিনসেন্ট মিনেল্লি, আলফ্রেড হিচকক, বিলি ওয়াইল্ডারের মতো दिग्गজদের কাজ তুলে ধরা হয়েছে।
লংওয়ার্থ তাঁদের কাজের মধ্য দিয়ে দর্শকদের সেই সব সিনেমা সম্পর্কে অবগত করেন, যা হয়তো অনেকের কাছেই অজানা। তিনি মনে করেন, খ্যাতির শীর্ষে থাকা নির্মাতারাও তাঁদের জীবনের শেষ দিকে এসে নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সংগ্রাম করেন।
কারিনা লংওয়ার্থের কাজের বৈশিষ্ট্য হল, তিনি গভীর গবেষণা করেন এবং আকর্ষণীয়ভাবে গল্প বলেন। তাঁর বলার ধরন শ্রোতাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।
তিনি বিভিন্ন চরিত্রে কণ্ঠ দেন, যা তাঁর পডকাস্টকে আরও বেশি জীবন্ত করে তোলে। এই পডকাস্টের মাধ্যমে তিনি পুরোনো দিনের সিনেমা, তাদের নির্মাতা এবং সেই সময়ের সংস্কৃতিকে নতুন করে দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন।
লন্ডনের বিএফআই সাউথব্যাঙ্কে লংওয়ার্থের পডকাস্টে আলোচিত সিনেমাগুলোর একটি প্রদর্শনী চলছে। এই ধরনের উদ্যোগ চলচ্চিত্র প্রেমীদের মধ্যে ক্লাসিক সিনেমা সম্পর্কে আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তুলবে, এমনটাই আশা করা যায়।
কারিনা লংওয়ার্থের মতে, চলচ্চিত্র ইতিহাসকে জানা এবং মনে রাখা জরুরি। তাঁর এই কাজের মাধ্যমে সিনেমাপ্রেমীরা যেমন নতুন কিছু জানতে পারেন, তেমনই পুরনো দিনের সিনেমাগুলোও নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়।
তাঁর এই প্রয়াস চলচ্চিত্র জগৎকে আরও সমৃদ্ধ করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান