কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গোলাগুলি, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা
নয়াদিল্লী, ভারত – কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে আবারও তীব্র গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে মর্টার শেল ও বন্দুকের গুলি বর্ষণের অভিযোগ এনেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে এই অঞ্চলে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানের একজন পুলিশ কর্মকর্তা আদিল আহমেদ জানান, নিয়ন্ত্রণ রেখার (LoC) কাছাকাছি এলাকায় গোলাগুলিতে পাকিস্তানের অংশে অন্তত চারজন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন। সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গোলাগুলি চলেছে।
অন্যদিকে, ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানি সেনারা একাধিক স্থানে তাদের পোস্টে আর্টিলারি, মর্টার ও ভারী অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে। ভারতীয় সেনারাও এর জবাব দিয়েছে, যার ফলে ভোর পর্যন্ত তীব্র সংঘর্ষ হয়। ভারতীয় অংশে উরি সেক্টরে গোলাগুলিতে এক নারী নিহত হয়েছেন এবং আরও দুইজন বেসামরিক লোক আহত হয়েছেন।
বুধবার থেকে এ পর্যন্ত ভারতীয় অংশে নিহত বেসামরিক নাগরিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উভয় দেশকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে, ভারতের সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার)-কে ৮,০০০ এর বেশি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশনার কারণ হিসেবে তারা মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার অভিযোগ এনেছে।
সংঘাতের কারণে ইতিমধ্যে স্কুল, খেলাধুলা এবং বিমান চলাচলও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। ধর্মশালা শহরে একটি ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন ১০,০০০ এর বেশি দর্শককে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া, পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরসহ উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে স্কুল ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট চলাচলও স্থগিত করা হয়েছে।
শেয়ার বাজারের উপরও এর প্রভাব পড়েছে। শুক্রবার সকালে ভারতীয় শেয়ার বাজার সেনসেক্স ৬৬২ পয়েন্ট এবং নিফটি ফিফটি ২১৫ পয়েন্ট কমেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ “আমাদের ব্যবসা নয়”। তিনি উভয় দেশকে উত্তেজনা কমাতে উৎসাহিত করার কথা বলেছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস