কাশ্মীর নিয়ে চরম উত্তেজনা! দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে কি যুদ্ধ?

কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশ দুটিকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

একইসঙ্গে, হামলার সঙ্গে জড়িত জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে পাকিস্তানকে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করার কথা বলেছে তারা।

গত সপ্তাহে ভারতীয়-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এই ঘটনার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।

উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভারত সরকার এরই মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে।

এর জবাবে পাকিস্তানও ভারতের ফ্লাইটগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভেন্স বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা আশা করি, ভারত এই সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়া এমনভাবে জানাবে, যা বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ না নেয়।

আমরা এও আশা করি, পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ডে সক্রিয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করবে।”

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও উভয় দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং উত্তেজনা কমাতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

রুবিও নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন।

তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে এই হামলার নিন্দা জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং তদন্তে সহযোগিতা করতে বলেছেন।

উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আত্তাউল্লাহ তারার সম্প্রতি জানান, তাদের কাছে খবর আছে যে ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।

যদিও সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

জম্মু-কাশ্মীর বিতর্কিত অঞ্চলটিতে প্রায় ৮০ বছর ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ চলছে।

উভয় দেশই এই অঞ্চলের মালিকানা দাবি করে।

এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ দুই দেশের হাতে বিভক্ত।

অতীতে কাশ্মীর নিয়ে দু’দেশের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে।

সামরিক শক্তির দিক থেকে ভারত পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে।

ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি।

তাদের সামরিক বাহিনীতে প্রশিক্ষিত সৈন্যের সংখ্যাও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি।

ভারতের সামরিক সক্ষমতা বিশেষভাবে নৌবাহিনীতে অনেক শক্তিশালী।

তাদের বহরে রয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিন।

তবে, উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর।

তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লাও উল্লেখযোগ্য।

ফলে, কাশ্মীর পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে আরও গুরুতর রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বর্তমানে, উভয় দেশই সীমান্তে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেছে।

নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি)-তে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে।

বর্তমানে, কাশ্মীর পরিস্থিতি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

কারণ, এখানে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি বা উত্তেজনা বড় ধরনের সংঘাতের কারণ হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং শান্তি ফেরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *