ঢাকা, [তারিখ]
কাশ্মীরে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালী নাগরিক। মঙ্গলবার কাশ্মীরের পাহালগাম এলাকায় এই হামলা চালানো হয়, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চালানো সবচেয়ে মারাত্মক হামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
হামলার পরপরই ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী গোটা কাশ্মীর উপত্যকায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। সেনা ও পুলিশ সদস্যরা সন্দেহভাজনদের খোঁজে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে এবং যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে। ঘটনার পর সেখানকার অনেক দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর প্রতিরোধ’ নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় এই হামলার কারণ হিসেবে কাশ্মীরে বহিরাগতদের বসতি স্থাপনকে দায়ী করেছে। তাদের দাবি, নিহত পর্যটকদের মধ্যে কয়েকজন ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্রুত সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। এই হামলার কারণে কাশ্মীরে শান্তি ও উন্নয়নের যে চেষ্টা চলছিল, তাতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে ২০১৯ সালে কাশ্মীরকে স্বায়ত্তশাসন থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর এই অঞ্চলে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল।
পর্যটকদের ওপর এই হামলার ফলে উপত্যকা ছেড়ে যাওয়ার হিড়িক লেগেছে। শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেখা গেছে, পর্যটকরা তাদের ব্যাগ নিয়ে ট্যাক্সির দিকে যাচ্ছেন এবং হোটেল ত্যাগ করছেন।
এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নেতা। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্য দেশের প্রধানরাও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “নাগরিকদের ওপর হামলা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
কাশ্মীরের এই ঘটনা বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই অঞ্চলের অস্থিরতা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া, এই ধরনের ঘটনা পর্যটন শিল্পের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
পাকিস্তান সরকারও এই হামলার নিন্দা করে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান