ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে লেখার গুরুত্ব বুঝলেন ঔপন্যাসিক কিতামুরা!

বিখ্যাত ঔপন্যাসিক কেটি কিতামুরা: লেখার গুরুত্ব আজও অপরিসীম

বর্তমান সময়ে যখন বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, ঠিক সেই মুহূর্তে লেখকদের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেছেন খ্যাতিমান ঔপন্যাসিক কেটি কিতামুরা। সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর নতুন উপন্যাস ‘অডিশন’ নিয়ে আলোচনা করার সময়, তিনি সাহিত্য এবং সমাজের মধ্যেকার সম্পর্ককে নতুন করে তুলে ধরেছেন।

তাঁর মতে, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো নেতারা তাঁদের অপশাসন কায়েম করতে চান, তখন লেখকদের কলম আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। কারণ, লেখাই পারে মানুষের মনকে অন্যভাবে নাড়া দিতে, ভিন্ন চিন্তাভাবনার জন্ম দিতে।

কেটি কিতামুরার নতুন উপন্যাস ‘অডিশন’-এর গল্প এক নারীর জীবনকে কেন্দ্র করে বোনা হয়েছে। যেখানে মা ও ছেলের সম্পর্কের জটিলতা, আত্ম-পরিচয়ের সংকট, এবং ক্ষমতার পালাবদল অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

কিতামুরা জানান, এই উপন্যাসের মূল ভাবনা এসেছে একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা থেকে। এক ব্যক্তি নিজেকে কারও ছেলে দাবি করে, যাঁর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। এই ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনাই তাঁকে নতুন করে গল্প লেখার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

কিতামুরা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি জানান, লেখক স্বামী হারি কুঞ্জরুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। তাঁরা একে অপরের কাজের সমালোচক এবং শুভাকাঙ্ক্ষী।

কিতামুরা মনে করেন, তাঁদের মধ্যেকার এই বোঝাপড়াই তাঁদের সাহিত্যচর্চাকে আরও উন্নত করে।

লেখিকা হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কিতামুরা বলেন, “আমি সবসময়ই চেয়েছি, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কথা আমার লেখায় তুলে ধরতে।” মা হিসেবে তিনি তাঁর সন্তানদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখছেন।

তিনি বলেন, “সন্তানদের বেড়ে ওঠা এবং তাদের নিজস্ব জগৎ তৈরি হওয়ার সময় মা হিসেবে আমি অনেক সময়ই অসহায় বোধ করি।”

লেখাপড়ার জগৎ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কিতামুরা জানান, তিনি একসময় ব্যালে নৃত্যশিল্পী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে তিনি লেখাকেই নিজের ধ্যান-জ্ঞান হিসেবে বেছে নেন।

তাঁর মতে, নাচের মতো লেখাও এক ধরনের শৃঙ্খলা ও অধ্যবসায়ের নাম।

রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে কিতামুরা মনে করেন, লেখকদের এখন আরও বেশি করে সমাজের কথা বলতে হবে। কারণ, লেখাই পারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে, ভিন্ন সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগাতে।

তাঁর মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে, সাহিত্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে।

বর্তমানে কিতামুরা নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করছেন। একইসঙ্গে তিনি তাঁর পরবর্তী উপন্যাস নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।

জীবনের এই ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি লেখার জন্য সময় বের করেন। তাঁর মতে, “জীবনের এই জটিলতাই আমার লেখার মূল উপাদান।”

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *