ট্রাম্পের ‘আশীর্বাদ’ পেতে পাxton-এর স্কটল্যান্ড সফর: চাঞ্চল্যকর তথ্য!

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটন সিনেটর হওয়ার দৌড়ে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন আদায়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। রিপাবলিকান দলের প্রাথমিক নির্বাচনে বর্তমান সিনেটর জন কর্নিনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি।

জানা গেছে, ট্রাম্পের সমর্থন পাওয়ার জন্য সুদূর স্কটল্যান্ড পর্যন্ত পাড়ি জমিয়েছিলেন প্যাক্সটন।

গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে, প্যাক্সটনকে দেখা যায় স্কটল্যান্ডের টার্নবেরিতে, ট্রাম্পের বিলাসবহুল গলফ রিসোর্টে। সেখানেই তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

যদিও তাদের মধ্যে খেলা হয়নি, তবে তারা কিছু সময়ের জন্য কথা বলেন, যেখানে টেক্সাসের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্র মারফত জানা যায়, প্যাক্সটন চেয়েছিলেন ট্রাম্প যেন তাকে সমর্থন করেন।

হোয়াইট হাউস প্রাথমিকভাবে ট্রাম্প ও প্যাক্সটনের মধ্যে কোনো আলোচনার কথা অস্বীকার করে। তবে ট্রাম্প যে টেক্সাসের সিনেট নির্বাচন খুব মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করছেন, সেটা স্পষ্ট।

আগামী ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে এই নির্বাচনটি গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্প প্রায়ই প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং সম্ভবত এবার তিনি দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে বেশি বাস্তববাদী হতে পারেন।

প্যাক্সটনের স্কটল্যান্ড সফরটি এর আগে গণমাধ্যমে আসেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সমর্থন আদায়ের জন্য প্যাক্সটনের এই প্রচেষ্টা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

এর আগে, গ্রীষ্মকালে প্যাক্সটনের সমর্থনে গঠিত একটি পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি (PAC) ফ্লোরিডার পাম বিচে একটি টিভি বিজ্ঞাপন চালায়, যা ট্রাম্পের মার-এ-লাগো এস্টেট থেকে দেখা যাচ্ছিল, যদিও টেক্সাসের ভোটারদের কাছে এর তেমন প্রভাব ছিল না।

বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে, আগামী মার্চ মাসের প্রাইমারি নির্বাচনে কর্নিনের চেয়ে প্যাক্সটনের অবস্থান বেশ ভালো। তবে, বর্তমান সিনেটর কর্নিনের মতো পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহ করতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন।

কর্নিন সিনেট নেতৃত্বের পূর্ণ সমর্থন লাভ করেছেন এবং শক্তিশালী তহবিল সংগ্রহকারী হিসেবে পরিচিত।

প্যাক্সটনের ঘনিষ্ঠজনদের মতে, ট্রাম্পের সমর্থন পেলে নির্বাচনের ফল প্যাক্সটনের দিকে আরও বেশি ঝুঁকবে এবং কর্নিনের পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। এমনকি প্যাক্সটনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রও সেই সময় উপস্থিত ছিলেন।

যদি প্যাক্সটন রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হতে পারেন, তাহলে ডেমোক্র্যাটরা টেক্সাসের এই আসনে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে পারে, কারণ তারা মনে করে এখানে জেতার সুযোগ রয়েছে। তবে, রিপাবলিকান দলের নেতারা এখনো পর্যন্ত কর্নিনের প্রতি সমর্থন বজায় রেখেছেন।

সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা জন থুন মনে করেন, কর্নিন প্রাইমারি ও সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হতে পারেন এবং রিপাবলিকানদের জন্য সিনেট ধরে রাখতে সহায়ক হবেন।

ট্রাম্প অবশ্য এখনো পর্যন্ত এই নির্বাচনে কোনো পক্ষ নেননি। যদিও রিপাবলিকান নেতারা তাকে কর্নিনকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প সম্ভবত নির্বাচনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

টেক্সাসের এই নির্বাচনটি এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিণত হয়েছে। কর্নিন ও প্যাক্সটন—উভয়েই ট্রাম্পের সমর্থন লাভের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ওয়েসলি হান্টও এই দৌড়ে আছেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ট্রাম্প এই নির্বাচন গভীরভাবে অনুসরণ করছেন। তিনি কর্নিন ও প্যাক্সটনের সমর্থকদের জানিয়েছেন যে, তিনি কাউকে সমর্থন করার জন্য এখনই তাড়াহুড়ো করছেন না।

উভয় প্রার্থীই তাদের প্রচারণায় ট্রাম্পের নাম ব্যবহার করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ট্রাম্প সম্ভবত এমন একজনকে সমর্থন করবেন যিনি ডেমোক্র্যাটদের সিনেট আসন জেতা থেকে বিরত রাখতে পারবেন। কারণ ট্রাম্পের কাছে ‘জয়ের’ গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *