আতঙ্কের সৃষ্টি! ভ্যাকসিন কমিটির প্রধান বদল করলেন কেনেডি, তোলপাড়!

স্বাস্থ্যখাতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিন বিষয়ক উপদেষ্টা প্যানেলের (Vaccine Advisory Panel) সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিষয়ক সচিব রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র এই পরিবর্তনটি এনেছেন, যেখানে তিনি পুরনো উপদেষ্টাদের সরিয়ে নতুন সদস্য নিয়োগ করেছেন। এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে টিকা বিষয়ক আলোচনা নতুন করে শুরু হয়েছে।

নতুন নিয়োগ পাওয়া উপদেষ্টাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন, যারা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং এমআরএনএ ভ্যাকসিনের (mRNA Vaccine) বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন। এই পরিবর্তনের ফলে, ভ্যাকসিন বিষয়ক নীতি নির্ধারণে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) বা সিডিসি (CDC)-এর উপদেষ্টা কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেস (টিকা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি), বা এসিআইপি (ACIP)-এর এই পরিবর্তনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই প্যানেল ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা পর্যালোচনা করে থাকে এবং কারা কোন ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন, সে বিষয়ে সুপারিশ করে।

স্বাভাবিকভাবেই, তাদের সুপারিশগুলি স্বাস্থ্য বীমা এবং চিকিৎসকদের রোগীদের প্রতি পরামর্শের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

নতুন প্যানেলের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ড. রবার্ট মালোন, যিনি একজন বায়োকেমিস্ট এবং এমআরএনএ প্রযুক্তির একজন অগ্রপথিক ছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। এছাড়াও রয়েছেন ড. মার্টিন কুলডর্ফ, যিনি একজন পরিসংখ্যানবিদ এবং মহামারী বিশেষজ্ঞ, যিনি ‘গ্রেট ব্যারিংটন ডিক্লারেশন’-এর সহ-লেখক।

এই ঘোষণাপত্রে হার্ড ইমিউনিটির (herd immunity) ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল।

এই পরিবর্তনের ফলে, ভ্যাকসিন বিষয়ক নীতিমালায় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, বিদ্যমান টিকাদান কর্মসূচীগুলির পর্যালোচনা করা হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, কিছু বিশেষজ্ঞ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এই পরিবর্তনের কারণে ভ্যাকসিন সম্পর্কে জনগণের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে এবং টিকাদান কর্মসূচি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অন্যদিকে, কেনেডি নতুন উপদেষ্টাদের নির্বাচনের কারণ হিসেবে জানিয়েছেন যে, আগের প্যানেলের সদস্যদের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত ছিল। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, নতুন সদস্যরা ভ্যাকসিন বিষয়ক সুপারিশ করার আগে ডেটা যাচাই করবেন এবং প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

এই পরিবর্তনের ফলে, ভ্যাকসিন নীতি এবং টিকাদান কর্মসূচীর ওপর কেমন প্রভাব পড়ে, এখন সেটাই দেখার বিষয়। এই ধরনের পরিবর্তনগুলি বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যখাতে আলোচনার জন্ম দেয় এবং টিকাদান কর্মসূচীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *