কেন্টাকির ভয়াবহ বন্যা: নদীর জল কমার অপেক্ষা, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে মানুষ!

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা: মৃতের সংখ্যা ২৩, উদ্ধারকাজ ব্যাহত।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি রাজ্যে কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণে নদ-নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে এরই মধ্যে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর, যা উদ্ধারকাজকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

বন্যার কারণে কেন্টাকি, টেনেসী, আরকানসাস এবং ইন্ডিয়ানা রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জরুরি বিভাগের কর্মীরা দুর্গত এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কেন্টাকির ফ্রাঙ্কফোর্ট শহরে নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি চলে আসায় সেখানকার ঐতিহাসিক বাফেলো ট্রেস ডিস্টিলারি (Buffalo Trace Distillery) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, শহরের অনেক রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং কারফিউ জারি করা হয়েছে।

কেন্টাকি রাজ্যের গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার (Andy Beshear) জানিয়েছেন, রাজ্যের ৫০০টির বেশি রাস্তা এখনো বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া, এক হাজারের বেশি মানুষ খাবার পানির অভাবে ভুগছেন এবং প্রায় ৩ হাজার মানুষকে পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ফ্রাঙ্কফোর্টে বসবাসকারী ৭৮ বছর বয়সী রাসেল হারড জানান, তিনি ৪০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন, কিন্তু এমন ভয়াবহ বন্যা আগে কখনো দেখেননি।

বন্যার্তদের উদ্ধারের জন্য উদ্ধারকর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তাদের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, উষ্ণ তাপমাত্রা, অস্থির বায়ুমণ্ডল এবং শক্তিশালী বাতাসের কারণে এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

আর্কানসাসের গভর্নর সারা হাকাবি স্যান্ডার্স হার্ডে শহরের পরিস্থিতিকে হৃদয়বিদারক বলে বর্ণনা করেছেন।

ওয়েস্ট মেমফিসের অগ্নিনির্বাপক প্রধান ব্যারি ইলি জানিয়েছেন, তাদের কর্মীরা একশোর বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছেন।

এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে।

তবে তীব্র শীত এবং প্রতিকূল পরিবেশের কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে বেগ পেতে হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *