কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে এক ব্লগারের পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ চলছে। পুলিশের দাবি ছিল, আলবার্ট ওজওয়াং নামের ওই ব্লগার কারারক্ষীদের সেলে আত্মঘাতী হয়েছেন।
তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পুলিশের এই দাবির সঙ্গে গুরুতর অসঙ্গতি ধরা পড়েছে, যার জেরে বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়েছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার ওজওয়াংকে ‘মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। রবিবার তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় এবং পরে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশের প্রাথমিক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ওজওয়াং ‘সেল-এর দেয়ালে মাথা ঠুকে’ আহত হয়ে মারা গেছেন।
কিন্তু ময়নাতদন্তের পর সরকারি প্যাথলজিস্ট বার্নার্ড মিডিয়া জানান, ওজওয়াংয়ের মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং তার শরীরে আরও অনেক আঘাতের প্রমাণ মিলেছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আঘাতের ধরন দেখে মনে হচ্ছে, এটি আত্মঘাতী হওয়ার মতো নয়, বরং ‘আক্রমণের ফল’।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়।
বিক্ষোভকারীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে।
ওজওয়াং শিক্ষকতা করতেন এবং অনলাইনে তার সরব উপস্থিতির জন্য পরিচিত ছিলেন।
তিনি সরকারের নীতির সমালোচক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
কেনিয়ার পুলিশ প্রধান ডগলাস কানজা বুধবার এক সংসদীয় কমিটিকে জানান, ওজওয়াংয়ের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে প্রথমে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল।
তিনি এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
কানজা আরও জানান, ডেপুটি পুলিশ প্রধান এলিউদ লাগাতের বিরুদ্ধে ওজওয়াং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন, যার জেরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা এলিউদ লাগাতের অপসারণের দাবিও জানাচ্ছেন।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন পুলিশের হাতে এমন ‘tragic occurrence’ (tragic occurrence) ‘হৃদয়বিদারক’ এবং ‘অগ্রহণযোগ্য’।
ইতিমধ্যেই ইন্ডিপেন্ডেন্ট পুলিশিং ওভারসাইট অথরিটি (আইপিওএ) ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
ব্লগার ওজওয়াংয়ের মৃত্যু নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকেই মনে করছেন, সরকার সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে।
গত বছর একটি বিতর্কিত আর্থিক বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জেরে বেশ কয়েকজন সরকার সমালোচক ‘নিখোঁজ’ হয়েছিলেন।
এই ঘটনা সেই বিতর্ককে আরও উস্কে দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন