কেনিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ডাচ রাজার কেনিয়া সফর
নয়াদিল্লি, [আজকের তারিখ]। কেনিয়াতে ডাচ রাজা ও রানী’র সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তবে দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে।
কেনিয়ার সরকার সমালোচকদের গ্রেপ্তার করছে এবং তাদের আটক করে রাখছে, এমন অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে, সরকারের নতুন কর নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, গত জুনে সরকার বিরোধী বিক্ষোভের সময় প্রতিবাদকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালায় এবং এর একটি অংশে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর সরকার বিক্ষোভকারীদের ওপর কঠোর ব্যবস্থা নেয় এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করে।
শুধু তাই নয়, সরকার বিরোধী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টের কারণে অনেক যুবককে অপহরণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি অপহরণ ও গুমের প্রতিবাদ করায় ডিসেম্বরেও অনেক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডাচ রাজা উইলিয়াম-আলেক্সান্ডার এবং রানী ম্যাক্সিমার কেনিয়া সফর বাতিলের দাবিতে ইতোমধ্যে change.org ওয়েবসাইটে ২০,০০০ এর বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন। নেদারল্যান্ডস সরকারও তাদের কাছে আসা ৩০০টির বেশি ইমেলের মাধ্যমে একই অনুরোধ পেয়েছে।
তবে, ডাচ সরকার জানিয়েছে যে পূর্বনির্ধারিত সফরসূচি অনুযায়ী তারা কেনিয়া সফর করবেন।
সোমবার রাতে ডাচ রাজকীয় দম্পতি কেনিয়ায় পৌঁছান। মঙ্গলবার সকালে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, রাজা উইলিয়াম-আলেক্সান্ডারকে ২১ তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্মান জানানো হয় এবং তিনি গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন।
তবে, রাজকীয় এই সফরের প্রথম দিনে কেনিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়-আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মাচারিয়া মুনোনে একে জনগণের “নিম্ন মনোবল”-এর ফল হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, “সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা কমে গেছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন সেভাবে কাজ করছে না। একসময় কেনিয়ার যে কূটনৈতিক প্রভাব ছিল, সেটিও এখন আর নেই।”
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল শনিবার কেনিয়া ও নেদারল্যান্ডস উভয় সরকারকে এই সফরের কেন্দ্রবিন্দুতে মানবাধিকারকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে কেনিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর দ্রুত তদন্ত ও ভুক্তভোগীদের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে কেনিয়া জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে নির্বাচিত হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো দেশটির সরকারকে নাগরিক স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস