গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নতুন নির্দেশ, খান ইউনিস ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা।
গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আবারও খান ইউনিসের বাসিন্দাদের শহর ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। সোমবার (ডিসেম্বর ৪, ২০২৩) ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই ঘোষণা আসার পরেই সেখানে তীব্র বোমা হামলা শুরু হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের জীবন বাঁচাতে আল-মাওয়াসির দিকে যেতে বলা হয়েছে, যা ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার সকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আভিখাই আদ্রাই এক বিবৃতিতে জানান, খান ইউনিসকে ‘সংকটাপন্ন যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এর পরেই সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশের সঙ্গে বানি সুহাইলা এবং আবাসন এলাকার বাসিন্দাদেরও স্থান ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
এর আগে, গত কয়েকদিনে মধ্য গাজার আল-কারারা শহর থেকেও বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ক্রমাগতভাবে বাড়ছে, যার ফলে সেখানকার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার খান ইউনিস এলাকায় অন্তত ৩০টি বিমান হামলা হয়েছে, যাতে অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছে।
গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের জন্য বর্তমানে জীবন ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে। এর আগে, যুদ্ধের সময় একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার সাধারণ মানুষ। অনেককে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্ধারিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’-এ আশ্রয় নিতে হয়েছে, যেমন আল-মাওয়াসি। কিন্তু সেখানেও বোমা হামলা হয়েছে। আল-জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজ্জুম জানিয়েছেন, নতুন এই নির্দেশ খান ইউনিসে ‘পূর্ণমাত্রায় আক্রমণের’ ইঙ্গিত দিচ্ছে। সেখানকার বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে রয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা ভূখণ্ডের ‘নিয়ন্ত্রণ নেবে’। তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক চাপ কমানোর জন্য সীমিত আকারে ত্রাণ সরবরাহ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ এই ত্রাণ সরবরাহ শুরু হবে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
গাজায় খাদ্য ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানকার হাসপাতালগুলোও ইসরায়েলি হামলার শিকার হচ্ছে। চিকিৎসা সরঞ্জাম, সরবরাহ এবং জ্বালানির অভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ কমিটির সামরিক শাখা, আল-নাসের সালাহ আল-দিন ব্রিগেড জানিয়েছে, তাদের কমান্ডার আহমেদ সারহান খান ইউনিসে নিহত হয়েছেন। সোমবার ভোরে ড্রোন ও যুদ্ধ বিমানের সহায়তায় পরিচালিত এক অভিযানে তাকে হত্যা করা হয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা