নিজে কিছুই না করলে কি মজা করা যায়? লেখক যা করলেন!

শিরোনাম: অবসর সময়ে দ্বিধা: কাজ না করার এক বিচিত্র গল্প।

একদিন সকালে, বাড়ির সবাই যখন নানা কাজে ব্যস্ত, তখন লেখক আবিষ্কার করলেন তিনি একা। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব সবাই হয় কাজে, না হয় ভ্রমণে গেছেন। এমন একটা পরিস্থিতিতে, যখন হাতে অফুরন্ত সময়, তখন যেন এক অদ্ভুত দ্বিধা এসে ভর করে।

কি করা উচিত, আর কি করা উচিত নয়, এই নিয়ে শুরু হয় এক অন্তহীন দোলাচল।

ঘরের কাজগুলি সেরে ফেলা যায়, যেমন অফিসের কাগজপত্র গোছানো, অথবা বাড়ির সামান্য কিছু মেরামত। কিন্তু কোনোটাই যেন মনকে টানতে পারে না।

বরং তিনি আবিষ্কার করলেন, তাঁর মনোযোগ চলে যাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতির দিকে। শেয়ার বাজারের সূচকগুলো পড়তির দিকে, আর তিনি যেন সেই দৃশ্য উপভোগ করার জন্য বসে আছেন।

হাতে একটি বেহালা, কিন্তু বাজানোর কোনো ইচ্ছাই নেই।

দিনের শুরুটা হয়েছিল এক গ্লাস ফলের রস দিয়ে। বড় ছেলে একটি পুরোনো জুসার কিনে এনেছিল, আর বাড়ির সবাই মিলে লেগে গিয়েছিল ফল থেকে রস বের করতে।

কিন্তু সেই উৎসাহও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। এমনকি একটা সময়ে তিনি আবিষ্কার করলেন, তাঁর অফিসের দেরাজের তালাটা মেরামত করারও যথেষ্ট সময় আছে, কিন্তু সেদিকেও মন দিতে ইচ্ছে করছে না।

হঠাৎ করেই মনে হলো, হয়তো স্নান করে কিছু বই পড়া যেতে পারে। অথবা যে কয়েকটি বিদেশি টিভি সিরিজ মাঝপথে দেখতে বন্ধ হয়ে আছে, সেগুলোর একটা শেষ করা যেতে পারে।

কিন্তু কাজের জগৎটা যেন সবসময় হাতছানি দিয়ে ডাকে। আসলে কাজ না করার অজুহাত হিসেবেই যেন এই অবসর সময়গুলো!

এমন সময়ে লেখকের কাছে একটি ভাষা শেখার অ্যাপ থেকে ইতালিয়ান ভাষা শেখার প্রস্তাব আসে। পুরনো ট্যাক্সের হিসাব মেলানোর জন্য তাঁর হিসাবরক্ষক তাগাদা দেন।

স্ত্রী দূরের একটি বাগান থেকে কিছু চারা গাছের ছবি পাঠান, জানতে চান তাঁর লাগবে কিনা। লেখকের মনে হয়, তিনি ইচ্ছে করলেই নিজের জন্য কিছু চারা লাগাতে পারেন, অথবা মাছের দোকান থেকে পছন্দের মাছ কিনে আনতে পারেন।

কিন্তু তিনি যেন এক অচেনা দ্বিধায় বন্দী।

অবশেষে, তিনি আবিষ্কার করেন, এই অবসর সময়ে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় কাজ হলো কিছুই না করা। সারা দিন তিনি হয়তো বিশ্ব অর্থনীতির ওঠানামা দেখছেন, অথবা কিছুক্ষণ বাজাচ্ছেন, কিন্তু কোনো কাজেই যেন মন নেই।

যেন সময় কাটানোর এটাই সেরা উপায়।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *