কিম কার্দাশিয়ান, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন একজন তারকা, ২০১৬ সালে প্যারিসে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। প্যারিস ফ্যাশন উইকের সময়কালে, মুখোশধারী কয়েকজন লোক তার হোটেল কক্ষে ঢুকে তাকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে ফেলে এবং মূল্যবান জিনিসপত্র লুঠ করে নিয়ে যায়।
সম্প্রতি এই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে অভিযুক্তদের বিচার চলছে এবং সেখানেই কিম কার্দাশিয়ান তার বক্তব্য পেশ করেন।
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে কিম জানান, সেই ভয়ঙ্কর রাতে তিনি নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন। ডাকাতরা তাকে বেঁধে ফেলার পর তিনি এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যে, তার মনে হয়েছিল তিনি হয়তো ধর্ষিত হতে যাচ্ছেন।
ঘটনার সময় তিনি সামান্য পোশাক পরিহিত ছিলেন এবং ডাকাতদের একজন যখন তার দিকে এগিয়ে আসে, তখন তিনি মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সৌভাগ্যবশত, শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু ঘটেনি, তবে ঘটনার ভয়াবহতা তার মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে।
এই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দশজন ব্যক্তির বিচার চলছে। ফরাসি মিডিয়া তাদের ‘দাদুর দল’ নামে অভিহিত করেছে, কারণ তাদের অনেকেরই বয়স বেশি এবং তারা আগে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত ছিল।
জানা যায়, ডাকাতরা কিমের কাছ থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের অলঙ্কার লুঠ করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে তার প্রাক্তন স্বামী কানয়ে ওয়েস্টের দেওয়া প্রায় চার মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি আংটিও ছিল।
ডাকাতির ঘটনার পর কিম কোনোমতে হাত মোচড় দিয়ে বাঁধন খুলে ফেলেন এবং সাহায্যের জন্য ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে চিৎকার করেন। তিনি মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সূত্র ধরেই সম্ভবত ডাকাতরা তার গতিবিধি জানতে পেরেছিল।
এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ফরাসি পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজন এই ডাকাতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল, আবার কেউ কেউ ছিল সহযোগী।
অভিযুক্তদের মধ্যে একজন হলেন কিম কার্দাশিয়ানের প্যারিসের গাড়িচালকের ছোট ভাই।
এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ৭১ বছর বয়সী ইউনিস আব্বাস, যিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি একটি বইও লিখেছেন, যেখানে তিনি এই ডাকাতির ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন।
যদিও তিনি জানিয়েছেন, বইটির শিরোনাম তিনি দেননি এবং এটি তার ঘটনার সঠিক চিত্র তুলে ধরে না।
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে আব্বাস জানান, তিনি এই ঘটনার জন্য অনুতপ্ত, কারণ এর ফলে অনেকে মানসিক আঘাত পেয়েছেন।
এই ডাকাতির ঘটনায় প্রায় নয় মিলিয়ন ডলার মূল্যের জিনিস খোয়া গিয়েছিল, যার অধিকাংশই এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তথ্য সূত্র: পিপল