শিরোনাম: প্যারিসের আদালতে ২০১৬ সালের ডাকাতির স্মৃতিচারণ, সাক্ষ্য দেবেন কিম কার্দাশিয়ান।
২০১৬ সালে প্যারিসে ঘটে যাওয়া একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা, যেখানে মার্কিন তারকা কিম কার্দাশিয়ানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৬ মিলিয়নের বেশি মূল্যের গয়না লুঠ করা হয়। সেই ঘটনার শিকার কিম কার্দাশিয়ান এবার প্যারিসের আদালতে হাজির হয়ে তাঁর ওপর হওয়া অত্যাচারের স্মৃতিচারণ করবেন এবং সাক্ষ্য দেবেন।
খবর সূত্রে জানা যায়, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১০ জন ব্যক্তির বিচার চলছে, এবং তাদের বিরুদ্ধেই তিনি সাক্ষ্য দেবেন।
এই ঘটনার পর কিম কার্দাশিয়ান দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন। ঘটনার অভিঘাত এতটাই গভীর ছিল যে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমি বাইরে যেতে ঘৃণা করতাম। আমি চাইতাম না কেউ জানুক আমি কোথায় আছি…আমার খুব দুশ্চিন্তা হতো।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার শুনানিতে জনসাধারণের ব্যাপক উপস্থিতি আশা করা হচ্ছে। নিরাপত্তারক্ষীরাও প্রস্তুত রয়েছেন।
সাংবাদিকদের সুবিধার জন্য একটি অতিরিক্ত আদালত কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে ভিডিও ফিডের মাধ্যমে শুনানির সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
কিম কার্দাশিয়ানের আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি ফরাসি বিচার ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এই বিচার প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন।
ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রথমে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও, তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন এবং গুরুতর অসুস্থতার কারণে আরেকজনকে বিচারের প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্তদের বেশিরভাগই ষাট ও সত্তরের কোঠায় পৌঁছেছেন। ফরাসি সংবাদমাধ্যম তাদের ‘দাদা ডাকাত’ নামে অভিহিত করেছে।
যদিও তদন্তকারীরা বলছেন, তারা কোনো নিরীহ অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি নন, বরং সুসংগঠিত একটি অপরাধী চক্রের সদস্য।
অভিযুক্তদের মধ্যে দুজন ঘটনার সময় উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। বাকিরা তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন, এমনকি তাদের কেউ কেউ কিম কার্দাশিয়ানকে চেনেন না বলেও দাবি করেছেন।
তবে পুলিশের ধারণা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিমের গয়না প্রদর্শনের ছবি এবং তাঁর গতিবিধির ওপর নজর রেখেছিল এই চক্রটি, যা তাদের অপরাধ সংঘটনে সাহায্য করেছে।
এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারকাদের অতি-প্রকাশের ঝুঁকি নতুন করে আলোচনায় আসে। কিম কার্দাশিয়ানের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ফরাসি কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কিম এবং যারা তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছিল, তাদের মুখোমুখি হতে তিনি প্রস্তুত।
এই মামলার শুনানিতে কিম কার্দাশিয়ানের সাক্ষ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তাঁর বয়ানে উঠে আসবে সেই রাতের বিভীষিকা, যখন ডাকাতরা তাঁকে মার্বেলের বাথরুমে বন্দী করে রেখেছিল এবং তিনি তাঁর সন্তানদের আর দেখতে পাবেন কিনা, সেই আশঙ্কায় ছিলেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস