কান্নাভেজা কন্ঠে কিম সু-হিউনের বিস্ফোরক জবাব! প্রয়াত অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে

দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় অভিনেতা কিম সু-হিউনের বিরুদ্ধে প্রয়াত অভিনেত্রী কিম সাই-রনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ওঠা বিতর্ক অবশেষে মুখ খুললেন তিনি। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিনেতা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিনোদন জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই ঘটনায় জানা যায়, একটি ইউটিউব চ্যানেলে অভিযোগ করা হয়েছিল যে কিম সু-হিউন, কিম সাই-রনের সঙ্গে এমন সময় সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন যখন তিনি নাবালিকা ছিলেন। এই অভিযোগের পরেই অভিনেতা দ্রুত আলোচনায় আসেন।

সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে ৩৭ বছর বয়সী কিম সু-হিউন স্পষ্টভাবে জানান, তিনি কখনোই কিম সাই-রনের সঙ্গে সম্পর্ক করেননি যখন তিনি নাবালিকা ছিলেন। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমরা দু’জন অভিনেতা হওয়ার বাইরে, স্বাভাবিক একটি জুটির মতোই ছিলাম। আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক ছিল, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পথ আলাদা হয়ে যায়। এরপর আমরা খুব কমই যোগাযোগ রেখেছি।”

সংবাদ সম্মেলনের পরেই অভিনেতার আইনজীবি এবং তাঁর সংস্থা গোল্ডমেডেলিস্ট একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় ইউটিউব চ্যানেল এবং কিম সাই-রনের পরিবারের বিরুদ্ধে মানহানি এবং তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কিম সাই-রনের বয়স যখন ২৪ বছর, তখন ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর বাড়িতে মৃতদেহ পাওয়া যায়। এর প্রায় দুই বছর আগে, ২০১৮ সালে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পর তিনি আলোচনা থেকে দূরে ছিলেন। এই ঘটনার জেরে তাঁর সম্মানহানি ঘটেছিল।

ইউটিউব চ্যানেলের ওই অভিযোগের পর, কিম সু-হিউনের বিরুদ্ধে অনলাইনে সমালোচনার ঝড় ওঠে। যদিও অভিনেতার পক্ষ থেকে তাঁর সংস্থা এর আগে জানিয়েছিল, তাঁদের সম্পর্ক যখন ছিল, তখন দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন।

এই বিতর্কের জেরে কিম সু-হিউনের জনপ্রিয়তায় বেশ প্রভাব পড়েছে। বিলাসবহুল ফ্যাশন ব্র্যান্ড প্রাদা এবং জনপ্রিয় কোরিয়ান প্রসাধনী ব্র্যান্ড ডিন্টো, উভয়ই অভিনেতার সঙ্গে তাদের সহযোগিতা চুক্তি বাতিল করেছে। ‘ইটস ওকে টু নট বি ওকে’ এবং ‘মাই লাভ ফ্রম দ্য স্টার’ -এর মতো জনপ্রিয় সিরিজে অভিনয় করে কিম সু-হিউন শুধু দক্ষিণ কোরিয়াতেই নয়, সারা এশিয়ার দর্শকদের কাছেও সুপরিচিত।

গত মাসে অভিযোগ ওঠার পর প্রথম কয়েকদিন নীরব থাকার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, তাঁর সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত নেটফ্লিক্স সিরিজ ‘কুইন অফ টিয়ার্স’-এর ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে, সেই কারণেই তিনি চুপ ছিলেন। তিনি আরও বলেন, “যদি আপনারা আমাকে কাপুরুষ বা স্বার্থপর বলেন, তবে আমি তা মেনে নেব।”

কিম সাই-রন একসময় শিশুশিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। যদিও ২০১৮ সালের গাড়ি দুর্ঘটনার পর তাঁর অভিনয় জীবন থমকে যায়। আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করলেও কারাদণ্ড দেননি, বরং প্রায় ১৪,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করেছিলেন। বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার সমান।

কিম সু-হিউন আরও দাবি করেছেন, তাঁর এবং কিম সাই-রনের মধ্যেকার কথোপকথন হিসেবে অনলাইনে যে বার্তাগুলো ছড়ানো হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

পুলিশ সূত্রে খবর, কিম সাই-রনের মৃত্যুর কারণ এখনো স্পষ্ট নয় এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।

তথ্যসূত্র: দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ মাধ্যম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *