শিরোনাম: অচেনা নারীর অপ্রত্যাশিত সাহায্য: দুর্ঘটনার পরে এক নারীর চোখে ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া এক সন্ধ্যায়, ব্যস্ত সড়কের ওপর ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার স্মৃতি আজও হয়তো সেই নারীর মনে গভীর ক্ষত হয়ে আছে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে যখন সব আশা প্রায় ফুরিয়ে গিয়েছিল, ঠিক তখনই এক অচেনা নারীর অপ্রত্যাশিত সহানুভূতি যেন এক ঝলক আলো হয়ে এসেছিল তাঁর জীবনে।
ঘটনাটি ঘটেছিল দ্রুতগতির যানবাহনের ভিড়ে। হঠাৎ একটি গাড়ি অন্য লেন থেকে এসে তাঁর মোটরসাইকেলের সামনে পড়তেই, তিনি নিয়ন্ত্রণ হারান এবং গুরুতর আহত হন। রাস্তার উপর রক্তাক্ত অবস্থায় যখন সাহায্যের জন্য আকুল আবেদন করছিলেন, তখন সবার চোখ এড়িয়ে যাননি একজন নারী।
তিনি এগিয়ে এসে আহত নারীর পাশে শুয়ে পড়েন, তাঁর হাত ধরে সাহস যোগাতে থাকেন। এই মানুষটির নাম সোফিয়া।
সোফিয়ার মানবিকতা ছিল দৃষ্টান্তস্বরূপ। অ্যাম্বুলেন্স আসার দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তিনি আহত নারীর পাশে ছিলেন, তাঁর সাথে কথা বলে সাহস জুগিয়ে গেছেন।
শুধু তাই নয়, হাসপাতালে নেওয়ার পর, তিনি নিয়মিত আহত নারীর খোঁজখবর নিয়েছেন। আহত নারীর স্বামীকেও খাবার দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তিনি, যিনি হয়তো ততক্ষণে স্ত্রীর দুর্ঘটনার খবর শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। সোফিয়ার এই ত্যাগ ও ভালোবাসার তুলনা মেলা ভার।
সোফিয়া ছিলেন একজন ‘FIFO worker’। অর্থাৎ, তিনি পরিবার থেকে দূরে, কর্মক্ষেত্রে কাজ করেন। নিজের পরিবারের মূল্যবান সময় ত্যাগ করে, সম্পূর্ণ অপরিচিত একজন মানুষের প্রতি এমন মমত্ববোধ সত্যিই বিরল।
আহত নারী এখনও সোফিয়ার কথা স্মরণ করেন এবং তাঁর এই নিঃস্বার্থপরতার কথা ভেবে বিস্মিত হন। তাঁর মতে, সোফিয়ার এই কাজটি ছিল ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা অন্যদেরও মানবিক হতে উৎসাহিত করবে।
এই ঘটনার মাধ্যমে আমরা উপলব্ধি করি, মানুষ হিসেবে একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও ভালোবাসার গুরুত্ব কতখানি। কোনো বিপদ বা অসহায় মুহূর্তে, একজন মানুষের সামান্য সাহায্যও অন্যজনের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। সোফিয়ার মতো মানুষেরা যুগে যুগে সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকেন।
তথ্য সূত্র: The Guardian