রাজা চার্লস ও প্রিন্স হ্যারির মধ্যে সম্পর্ক: ফাদার্স ডে’তে আবেগঘন বার্তা, ভাঙন কি মিটবে?
যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস ফাদার্স ডে উপলক্ষে একটি বিশেষ বার্তা দিয়েছেন, যেখানে প্রয়াত পিতা প্রিন্স ফিলিপ এবং কুইন ক্যামিলার বাবার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এই দিনে, যখন বিশ্বজুড়ে পিতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে, তখন রাজপরিবারের এই ছবিগুলো বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
তবে, এই আনন্দঘন মুহূর্তের মধ্যেই যেন লুকিয়ে রয়েছে রাজার ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে সম্পর্কের গভীর ফাটল।
ফাদার্স ডে’র দিনে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে একটি আবেগপূর্ণ পোস্ট করা হয়, যেখানে রাজা চার্লস ও প্রিন্সেস আনের একটি পুরনো ছবি ছিল, যেখানে তাদের বাবা প্রিন্স ফিলিপ তাদের দোলনায় ওঠাচ্ছেন। এছাড়াও কুইন ক্যামিলার বাবা মেজর ব্রুস শ্যান্ডের একটি ছবিও পোস্ট করা হয়।
এই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা ছিল, “বিশ্বের সকল বাবাকে ফাদার্স ডে’র শুভেচ্ছা।”
কিন্তু এই উৎসবের মধ্যেই আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে রাজার দূরত্ব। সম্প্রতি, প্রিন্স হ্যারি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি তার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে চান।
তিনি বলেন, “আমি আমার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করতে চাই। এখন আর লড়াই করার কোনও মানে নেই।” একই সঙ্গে তিনি এও জানান, বাবার সঙ্গে তার এখন সেভাবে কথা হয় না।
এর কারণ হিসেবে তিনি নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টির কথা উল্লেখ করেন। হ্যারি মনে করেন, নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যার কারণেই সম্ভবত তার বাবার সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তিনি চান মেগান, আর্চি এবং লিলিকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরতে, তবে নিরাপত্তা ছাড়া সেটা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান মার্কেল ২০২০ সালে রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যান। এর পর থেকেই তাদের সঙ্গে রাজপরিবারের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে।
সম্প্রতি, রাজা তৃতীয় চার্লসের জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও হ্যারি ও মেগানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
প্রিন্স হ্যারির নিরাপত্তা বিষয়ক একটি মামলাও বর্তমানে বিচারাধীন। তিনি যুক্তরাজ্যে তার নিরাপত্তা পুনর্বহাল করার জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
যদিও আদালতের রায়ে তার এই আবেদন খারিজ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, রাজা চার্লস বর্তমানে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছেন। রাজপ্রাসাদ সূত্রে খবর, রাজার চিকিৎসা এখনো চলছে এবং তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
প্রিন্স হ্যারির সাক্ষাৎকারে রাজার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বাবা ও ছেলের মধ্যে এই সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা এখনো পর্যন্ত খুবই ক্ষীণ বলেই মনে হচ্ছে। ফাদার্স ডে’র শুভেচ্ছা বার্তার মাধ্যমে হয়তো সম্পর্কের উষ্ণতা ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু ভাঙন মেরামতের পথে এখনো অনেক বাধা।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়্যাল ফ্যামিলি/ইনস্টাগ্রাম