বাদশাহ চার্লস-এর ভ্যাটিকান সফর: ইতিহাসের পাতায় নতুন দিগন্ত।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস-এর ভ্যাটিকান সফর ইতিহাসের পাতায় এক নতুন অধ্যায় যোগ করতে চলেছে। আগামীকালের এই সফরে তিনি পোপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, যা প্রায় ৫০০ বছর পর কোনো ব্রিটিশ রাজার পোপের সঙ্গে মিলিত হওয়ার বিরল ঘটনা।
এই সফর শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং ক্যাথলিক চার্চ এবং ইংল্যান্ডের চার্চের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিভেদ দূর করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বুধবার রাতে কুইন ক্যামিলার সঙ্গে রাজা চার্লস ইতালির রাজধানী রোমে পৌঁছান। সেখানে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার, তারা সিস্টিন চ্যাপেলে এক বিশেষ আন্তঃধর্মীয় প্রার্থনায় অংশ নেবেন। এই অনুষ্ঠানে পোপ এবং ইয়র্কের আর্চবিশপও উপস্থিত থাকবেন।
চার্চের ঐক্যের বার্তা দিতে এই ধরনের যৌথ প্রার্থনা এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো, ১৬শ শতকে রাজা অষ্টম হেনরির সময় থেকে ক্যাথলিক চার্চ এবং ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের মধ্যে যে বিভাজন তৈরি হয়েছিল, তা দূর করা।
রাজা অষ্টম হেনরি রোমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিজের চার্চ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই ঘটনার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
ভ্যাটিকান সিটি সফরকালে রাজা চার্লস সেন্ট পলস ব্যাসিলিকায়ও যাবেন। এই ব্যাসিলিকার সঙ্গে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে।
অতীতে ব্রিটিশ রাজারা এই ব্যাসিলিকার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থ দিতেন।
পোপ এরই মধ্যে রাজা চার্লসকে সেন্ট পলসের ‘রয়্যাল কনফ্রাটার’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এই সম্মানে সেখানে রাজার প্রতীক সম্বলিত একটি বিশেষ চেয়ার স্থাপন করা হবে, যা ভবিষ্যতে তাঁর উত্তরসূরিদের ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
এই সফরের মাধ্যমে, বিভিন্ন সময়ে ক্যাথলিক চার্চ এবং ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের মধ্যে যে শীতল সম্পর্ক ছিল, তা উষ্ণ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
১৯৮২ সাল থেকে যুক্তরাজ্য এবং ভ্যাটিকানের মধ্যে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান।
পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজার এই সফর শুধু প্রতীকী গুরুত্ব বহন করে না, বরং আন্তঃধর্মীয় সম্পর্কের উন্নতিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এই সফরের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহযোগিতা আরও বাড়বে বলে আশা করা যায়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন