ভাইকে ত্যাজ্য করলেন রাজা: রাজপরিবারের সম্মান বাঁচাতে নিলেন কঠিন সিদ্ধান্ত!

ব্রিটিশ রাজপরিবারে আবারও এক বড়সড় পরিবর্তন এসেছে, যেখানে রাজা তৃতীয় চার্লস তার ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে রাজকীয় উপাধি ও সম্মাননা থেকে বঞ্চিত করেছেন। এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হল, কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সম্পর্ক এবং এর ফলস্বরূপ সৃষ্টি হওয়া বিতর্ক।

রাজপরিবারের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং প্রিন্স উইলিয়ামের ভবিষ্যৎ শাসনের পথ সুগম করতেই রাজার এই পদক্ষেপ।

প্রিন্স অ্যান্ড্রু এখন থেকে আর প্রিন্স হিসেবে পরিচিত হবেন না। তিনি পরিচিত হবেন কেবল অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর নামে। বর্তমানে তিনি রাজার ব্যক্তিগত এস্টেট, স্যান্ড্রিংহামে বসবাস করবেন।

প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে অভিযোগের সূত্রপাত হয়, যখন জানা যায় যে তিনি, একসময় জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। এরপর ভার্জিনিয়া জিউফ্রে নামে এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।

জিউফ্রে অভিযোগ করেন, এপস্টাইনের মাধ্যমে তিনি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং প্রিন্স অ্যান্ড্রুও এতে জড়িত ছিলেন। যদিও প্রিন্স অ্যান্ড্রু বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

রাজা চার্লসের এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এসেছে, যখন তিনি নিজে স্বাস্থ্যগত সমস্যার সঙ্গে লড়ছেন। অনেকের মতে, রাজার এই পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজতন্ত্রের ভিত আরও মজবুত করা হবে এবং ভবিষ্যতে প্রিন্স উইলিয়ামকে মসৃণভাবে শাসনভার গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনার মাধ্যমে রাজপরিবারে একটি পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। এর আগে, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবদ্দশায় রাজপরিবারের সদস্যদের সমালোচনা করা কঠিন ছিল, কারণ রানির প্রতি মানুষের গভীর শ্রদ্ধা ছিল।

তবে রাজা চার্লস মনে করেন, রাজতন্ত্রকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো শুধু তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় নয়, বরং তা রাজপরিবারের সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গেও জড়িত। এর আগে, তিনি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এপস্টাইনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।

এর ফলস্বরূপ, তিনি তাঁর রাজকীয় দায়িত্ব ও দাতব্য পদগুলো থেকে সরে যেতে বাধ্য হন।

বর্তমানে, রাজা তৃতীয় চার্লসের এই সিদ্ধান্ত রাজপরিবারের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন বিতর্কিত এক রাজ সদস্যের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হল, তেমনই রাজতন্ত্রের ভাবমূর্তি রক্ষার একটি প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *