আতঙ্কের লড়াই! কিং কোবরার ভয়ঙ্কর লড়াইয়ের অজানা কথা!

কিং কোবরাদের (King Cobra) এক বিশেষ ‘যুদ্ধক্ষেত্র’-এর রহস্য উন্মোচন করেছেন বিজ্ঞানীরা। সাপ জগৎ-এর এই বিরল দৃশ্য সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ‘ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন’ জার্নালে।

থাইল্যান্ডের জঙ্গলে পুরুষ কিং কোবরাদের মধ্যে চলা এই লড়াই আসলে প্রজনন ঋতুতে সঙ্গীর অধিকারের জন্য এক ধরনের আচার-অনুষ্ঠান।

সাধারণত, কিং কোবরা (Ophiophagus hannah) মারাত্মক বিষধর এবং এরা অন্য সাপ শিকার করতে পারদর্শী। কিন্তু এই লড়াইয়ে তারা একে অপরের ক্ষতি করার পরিবর্তে এক বিশেষ কায়দায় কুস্তি লড়ে।

লড়াইয়ের সময় তারা একে অপরের চারপাশে পেঁচিয়ে যায় এবং প্রতিপক্ষকে মাটিতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। যেন এক বিশাল আকারের কুস্তি প্রতিযোগিতা!

ভার্জিনিয়া টেক-এর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক গবেষক, ম্যাক্স জোনস-এর মতে, “কিং কোবরাদের মধ্যেকার এই লড়াই সত্যিই অসাধারণ। তারা চাইলে সহজেই একে অপরকে মেরে ফেলতে পারে, কিন্তু তারা তা করে না।”

গবেষকরা জানিয়েছেন, এই লড়াইগুলি সাধারণত প্রজনন ঋতুতেই দেখা যায়। লড়াইয়ে জয়ী সাপটি সম্ভবত কাছাকাছি থাকা স্ত্রী কোবরার সাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ পায়।

লড়াইয়ে অংশগ্রহণকারী সাপগুলির আকার প্রায় একই রকম থাকে, যার কারণে মারাত্মক কামড়ানোর ঘটনা সাধারণত ঘটে না।

এই গবেষণায় উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, থাইল্যান্ডের সাকারাত বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ এবং কায়েং ক্রাচান ন্যাশনাল পার্কে এই ধরনের লড়াইয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, লড়াইগুলো প্রায় আধ ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের আচরণ কিং কোবরাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং প্রজনন সম্পর্কে নতুন ধারণা দেয়। তবে, বন্য পরিবেশে এই ধরনের লড়াই পর্যবেক্ষণ করা বেশ কঠিন।

গবেষকরা এই লড়াইগুলোর স্থান চিহ্নিত করে কোবরাদের আবাসস্থল রক্ষার উপর জোর দিয়েছেন। কারণ মানুষের ভয়ের কারণে কিং কোবরা প্রায়ই আক্রান্ত হয়।

মানুষের অসচেতনতা ও চোরা শিকারের ফলে এদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে। লড়াইয়ের সময় এরা মানুষের কাছাকাছি চলে আসে এবং অনেক সময় মানুষের হাতে মারাও পরে।

তাই, কোবরাদের প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। সাপ বিশেষজ্ঞ ভিনিসিয়াস মেন্ডেসের মতে, “কোবরাদের বাসস্থান রক্ষা করা গেলে, লড়াইয়ে হেরে যাওয়া সাপগুলিও নতুন সঙ্গী খুঁজে নিতে পারবে।”

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *