আশ্চর্যজনক! ভিসা শুনানিতে যাওয়ার পরেই কোরীয় ছাত্রীকে গ্রেফতার, অতঃপর…

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার এক শিক্ষার্থী। ওই তরুণীর ভিসা সংক্রান্ত জটিলতাকে কেন্দ্র করে নিউইয়র্ক ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন চার্চ সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

আটক হওয়া ইয়েনসু গো নামের ওই শিক্ষার্থী পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং নিউইয়র্কের একজন জনপ্রিয় এপিসকোপাল পাদ্রীর মেয়ে।

গত সপ্তাহে ভিসা শুনানির জন্য ম্যানহাটনে গিয়েছিলেন ইয়েনসু এবং তাঁর মা। শুনানির শেষে বের হওয়ার সময় ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর সদস্যরা তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

এরপরই ২০ বছর বয়সী ইয়েনসুকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় একটি ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারে নেওয়া হয়। পরে তাকে লুইজিয়ানার একটি ডিটেনশন সেন্টারে স্থানান্তরিত করা হয়।

ইয়েনসুর আটকের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নিউইয়র্ক এবং দক্ষিণ কোরিয়ার চার্চ সম্প্রদায়গুলো তাঁর মুক্তির দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত নিন্দনীয়।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, ইয়েনসুর ভিসার মেয়াদ দুই বছরের বেশি সময় আগে উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে নিউইয়র্কের এপিসকোপাল ডাইওসিস-এর আইনজীবী জানিয়েছেন, ইয়েনসুর বর্তমান ভিসার মেয়াদ ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রয়েছে এবং বৃহস্পতিবারের শুনানি ছিল ভিসা বাড়ানোর আবেদনের অংশ।

আইনজীবীর ভাষ্যমতে, তাঁরা একটি সাধারণ শুনানির জন্য গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে গিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে তারা এক অচেনা পরিস্থিতির শিকার হন।

ইয়েনসুর মা, রেভারেন্ড কাইরি কিম, নিউইয়র্কের এপিসকোপাল ডাইওসিস-এর এশীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন। তিনি কোরিয়ার অ্যাংলিকান চার্চের সিউল ডাইওসিসের প্রথম নারী পুরোহিত।

ইয়েনসু ও তাঁর মা ২০২১ সালে ধর্মীয় ভিসায় (আর-২) যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন।

ইয়েনসুর বাবা জানিয়েছেন, মেয়ের আটকের খবরে তিনি সম্পূর্ণ হতবাক হয়ে গিয়েছেন। তিনি জানান, তাঁর মেয়ে ভালো ছাত্রী ছিল এবং পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল।

তিনি আশা করেছিলেন, দ্বিতীয় বর্ষে পা দেওয়ার আগে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। মেয়ের মুক্তির জন্য তিনি দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ইয়েনসুর আটকের বিষয়টি নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং প্রয়োজনীয় কনস্যুলার সহায়তা প্রদান করছে।

ইয়েনসুর মুক্তির দাবিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল প্লাজায় সম্প্রতি একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। যেখানে বিভিন্ন চার্চের সদস্য, বন্ধু এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাঁর ছবি হাতে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বক্তারা ইয়েনসুর মানবিক দিক এবং তাঁর বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসার কথা তুলে ধরেন।

আটকের সময় ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিউইয়র্কের মতো আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে কঠোর অভিবাসন নীতি প্রয়োগের চেষ্টা চলছিল। ইয়েনসুর ঘটনা সেই প্রেক্ষাপটে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *