দক্ষিণ কোরিয়ার এক ছাত্রী, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্ডিউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, তাকে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে আটক করে মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার জেরে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে, অবশেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। সোমবার সন্ধ্যায় এই ছাত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়, ঘটনার কয়েক দিন আগে বৃহস্পতিবার তাকে আটক করা হয়েছিল।
আটক হওয়া ওই ছাত্রীর নাম ইয়েনসু গো, তবে বন্ধু ও পরিবারের কাছে ‘সু’ নামেই পরিচিত। তিনি মুক্তির পর তার মায়ের সঙ্গে মিলিত হন এবং জানান, তিনি দ্রুত মুক্তি পাবেন এমনটাই বিশ্বাস করতেন।
সু’র মা একজন যাজক।
জানা গেছে, সু’কে ম্যানহাটানে একটি ভিসা শুনানিতে অংশ নেওয়ার সময় আটক করা হয়। এরপর তাকে লুইজিয়ানার একটি ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সু’র আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তার ভিসার মেয়াদ এখনো ডিসেম্বর পর্যন্ত রয়েছে।
তবে, মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ (DHS) দাবি করেছে, তার ভিসার মেয়াদ দুই বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে।
নিউ ইয়র্কের এপিসকোপাল ডায়োসিসের আইনজীবী মেরি রথওয়েল ডেভিস জানান, তাঁরা খুবই আনন্দিত। সু’কে মুক্তি দেওয়ার জন্য তাঁরা অনেক চেষ্টা করেছেন।
তারা বোঝাতে চেয়েছেন, সু’কে আটক করে রাখাটা ঠিক হয়নি।
সু-কে তার আর-২ ভিসা, যা ধর্মীয় কর্মীর নির্ভরশীলতার ভিসা, তা স্টুডেন্ট ভিসায় রূপান্তর করার জন্য একটি শুনানিতে অংশ নিতে হয়েছিল। তিনি ২০২১ সালে মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।
সু’র মুক্তির জন্য নিউ ইয়র্ক এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন গির্জার সদস্যরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সু’র বন্ধু গ্যাব্রিয়েলা লোপেজ জানান, ভিসা শুনানির আগে সু কিছুটা চিন্তিত ছিল। তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সে কিছুটা নার্ভাস ছিল, এবং এখন তার ভয় সত্যি হয়েছে।’
সু’র বাবা বলেন, তারা অনলাইনে জানতে পারেন যে, তাদের মেয়েকে লুইজিয়ানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, তার মেয়ে পার্ডিউ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি কলেজে ভালো ফল করেছে।
তিনি চান, সু যেন তার পড়াশোনা ভালোভাবে শেষ করতে পারে এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং সু’কে কনস্যুলার সহায়তা দিচ্ছে। পার্ডিউ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও এই বিষয়ে অবগত এবং তারা সু’র পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
এই ঘটনার জেরে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন আইন আরও কঠোর হওয়ার বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ‘স্যাংচুয়ারি সিটি’ হিসেবে পরিচিত নিউ ইয়র্ক সিটির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
তথ্য সূত্র: সিএনএন