মালয়েশিয়ার সেরা ৫ খাবার: Kuala Lumpur-এ খাবারের ঠিকানা!

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর, শুধু আধুনিক স্থাপত্য আর শপিং মলের জন্য নয়, খাদ্যরসিকদের কাছেও এক দারুণ গন্তব্য। মালয়, চীনা ও ভারতীয় সংস্কৃতির মিশ্রণে এখানকার খাবারগুলি যেমন বৈচিত্র্যপূর্ণ, তেমনই রন্ধনশৈলীতেও রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া।

নামকরা রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে রাস্তার ধারের খাবার— সব জায়গাতেই মেলে অভিনবত্বের স্বাদ। আসুন, কুয়ালালামপুরের কয়েকটি অসাধারণ খাবারের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক যা ভ্রমণকালে আপনার রসনা তৃপ্ত করবে।

শুরুতেই আসা যাক ‘দেওয়াকান’ (Dewakan)-এর ‘বেলিনজাউ অরিগামি ফ্রগ’ (Belinjau Origami Frog)-এর কথায়। মালয়েশিয়ার স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে খাবার তৈরির এক দারুণ উদাহরণ এটি।

এই ডিশটির মূল আকর্ষণ হল বেলিনজাউ বাদাম দিয়ে তৈরি ক্র্যাকার, যা দেখতে অনেকটা অরিগামি ব্যাঙের মতো। হালকা মচমচে এই ক্র্যাকারের স্বাদও অসাধারণ, সঙ্গে পেরাহ বাদামের তেল যোগ করে এর স্বাদ আরও গভীর করা হয়েছে।

সবশেষে, স্ত্রী ব্যাঙের ডিমের প্রতীক হিসেবে ক্যাভিয়ার ব্যবহার করা হয়েছে, যা এই খাবারের স্বাদ ও সৌন্দর্য দুটোই বাড়িয়ে তোলে।

এরপর রয়েছে ‘বেটা কেএল’ (Beta KL) -এর ‘এ ফাইভ মিয়াজাকি মাসাক হিটাম’ (A5 Miyazaki Masak Hitam)। এই রেস্টুরেন্টটি আধুনিক মালয়েশিয়ান খাবারের জন্য সুপরিচিত।

তারা সাধারণ ঘরোয়া খাবারগুলিকেও ভিন্ন আঙ্গিকে পরিবেশন করে। এই ডিশটির প্রধান আকর্ষণ হল এ ফাইভ মিয়াজাকি ওয়াগিউ গরুর মাংস, যা ক্যারামেলাইজড শ্যালটস, রসুন, সয়া সস এবং ধনে ও জিরা-সহ মশলার মিশ্রণে তৈরি একটি গাঢ়, সুস্বাদু ‘মাসাক হিটাম’ সসের সাথে পরিবেশন করা হয়।

যারা সি-ফুড বা সামুদ্রিক খাবার ভালোবাসেন, তাদের জন্য ‘হাই কাহ ল্যাং’ (Hai Kah Lang)-এর সী-ফুড পরজ (Seafood Porridge) একটি দারুণ বিকল্প। কুয়ালালামপুরের এই জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টটি তাজা ও গুণমান সম্পন্ন উপকরণ ব্যবহার করে থাকে।

স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে চিংড়ি, শামুক ও স্কুইড সংগ্রহ করে তারা এই খাবারটি তৈরি করে। কাঠকয়লার আগুনে রান্না করার ফলে এটিতে হালকা ধোঁয়ার স্বাদ আসে।

পরজের সঙ্গে ধনে পাতার স্বাদ যোগ করে একে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা হয়।

এবার আসা যাক ‘রেকা বার’-এর ‘এবি কাতসু উবে সান্দো’ (Ebi Katsu Ube Sando)-এর কথায়। যারা স্যান্ডউইচ ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ পছন্দ।

এই স্যান্ডউইচে ব্যবহার করা হয় নরম উবে মিল্ক লোফ, যার ভেতরে থাকে সুস্বাদু প্রন কাটলেট। এছাড়াও থাকে ক্যারামেলাইজড বাঁধাকপি, ওকোনোমিয়াকি সস এবং ক্রিমি মেয়োনিজ।

সবশেষে, ফুরিকাকে সিজনিং ও পেস্তার গুঁড়ো দিয়ে পরিবেশন করা হয়।

যারা ডেজার্ট ভালোবাসেন, তারা ‘মারিনি’স অন ৫৭’-এর ক্যাভিয়ার tiramisu-র স্বাদ নিতে পারেন। পেট্রোনাস টাওয়ারের ৫৭ তলার এই রেস্টুরেন্টটি কুয়ালালামপুরের সুন্দর দৃশ্যের জন্য পরিচিত।

ক্লাসিক এই ডেজার্টটিকে তারা আধুনিক উপায়ে তৈরি করে। এখানে মাসকার্পোনের সাথে কফি ভেজানো লেডিফিঙ্গার বিস্কুট ব্যবহার করা হয় এবং কফি ক্যাভিয়ার দিয়ে সাজানো হয়।

সবশেষে, সোনার পাতা দিয়ে পরিবেশন করা হয় এই ডেজার্ট।

কুয়ালালামপুরের খাদ্য জগৎ শুধু মালয়েশিয়ার সংস্কৃতিকেই প্রতিফলিত করে না, বরং এটি খাদ্যপ্রেমীদের জন্য একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতাও বটে। ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখানকার প্রতিটি পদ যেন এক একটি শিল্পকর্ম।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *