বিখ্যাত শিল্পী এবং কিউরেটর কোয়ো কুওহ’র প্রয়াণ, বিশ্ব হারালো এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী এবং কিউরেটর কোয়ো কুওহ, যিনি আফ্রিকা মহাদেশের শিল্পকলার প্রসারে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে গেছেন, তাঁর প্রয়াণ ঘটেছে। শনিবার সুইজারল্যান্ডের বেসেল শহরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
কোয়ো কুওহ ছিলেন একজন দূরদর্শী শিল্পী এবং শিল্পকলার উৎসাহী। তিনি শুধু একজন কিউরেটরই ছিলেন না, বরং আফ্রিকা মহাদেশের শিল্পকলার উন্নতিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর প্রয়াণের মধ্য দিয়ে বিশ্ব হারালো এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে, যিনি শিল্পের জগৎকে নতুন দিশা দিতে পারতেন।
২০২৬ সালের ভেনিস বিয়েনালে-র কিউরেটর হিসেবে কুওহ’র নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, তিনিই ছিলেন এই সম্মান পাওয়া প্রথম আফ্রিকান নারী। তাঁর এই মনোনয়ন ছিলো শিল্পের জগতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি কুওহ’র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
ক্যামেরুনে জন্ম নেওয়া কোয়ো কুওহ ১৩ বছর বয়সে সুইজারল্যান্ডে চলে যান। সেখানে তিনি প্রশাসন ও ব্যাংকিং নিয়ে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি সামাজিক কর্মী হিসেবে অভিবাসী নারীদের সহায়তা করেছেন। ১৯৯৬ সালে তিনি আবার আফ্রিকায় ফিরে আসেন এবং শিল্পকলার সঙ্গে যুক্ত হন। সেনেগালের ডাকার-এ তিনি ‘র ম্যাটেরিয়াল কোম্পানি’ নামে একটি স্বাধীন আর্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৬ সালে তিনি কেপটাউনের ‘জেইটজ মিউজিয়াম অফ কনটেম্পোরারি আর্ট আফ্রিকা’ (Zeitz MOCAA)-তে কিউরেটর এবং নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এখানে তিনি আফ্রিকা এবং এর বাইরের কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীদের কাজকে তুলে ধরেন।
কুওহ-এর কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘বডি টক: ফেমিনিজম, সেক্সুয়ালিটি অ্যান্ড দ্য বডি ইন দ্য ওয়ার্কস অফ সিক্স আফ্রিকান উইমেন আর্টিস্টস’ এবং ‘স্টিল (দ্য) বার্বারিয়ানস’। তাঁর প্রদর্শনীগুলি আফ্রিকা এবং উত্তর-ঔপনিবেশিক প্রেক্ষাপটে নারীর কণ্ঠস্বরকে আরও শক্তিশালী করেছে।
ভেনিস বিয়েনালেকে কেন্দ্র করে কুওহ’র কাজগুলি আগামী প্রজন্মের শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। তাঁর প্রয়াণ বিশ্বজুড়ে শিল্পী, কিউরেটর এবং শিল্পবোদ্ধাদের মধ্যে এক গভীর শূন্যতা তৈরি করেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন