কিয়েভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা: ধ্বংসযজ্ঞ!

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে শনিবার ভোরে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

খবর অনুযায়ী, শহরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, যার ফলে অনেক বাসিন্দাকে আশ্রয় নিতে হয়েছে নিকটবর্তী মেট্রো স্টেশনে।

এই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই উভয়পক্ষের মধ্যে বন্দী বিনিময়ের প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়।

কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান, টাইমুর তাকাচেঙ্কো, টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, রুশ হামলায় অন্তত ছয় জন আহত হয়েছেন এবং শহরের সোলোমিয়ানস্কি জেলায় দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

ধ্বংসাবশেষ শহরের অন্তত চারটি জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা ইউরি বন্ডারচুক জানান, বিমান হামলার সাইরেন বাজার সাথে সাথেই ড্রোনগুলি উড়তে শুরু করে এবং এর কিছু পরেই তিনি বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন।

তার অ্যাপার্টমেন্টের বারান্দা, জানালা ও দরজা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো সতর্ক করে বলেন, হামলার আগে কিয়েভের দিকে ২০টির বেশি রুশ ড্রোন উড়ে আসছিল।

হামলার সময় ড্রোন ধ্বংসাবশেষ ওবোলন জেলার একটি শপিং মল এবং আবাসিক ভবনে পড়ে।

জরুরি পরিষেবা কর্মীদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বন্দি বিনিময়ের প্রথম পর্যায়ে উভয় দেশই প্রায় ৩৯০ জন করে সেনা ও বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দেয়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, এই বিনিময়ের মাধ্যমে ৩৯০ জন ইউক্রেনীয় তাদের বাড়িতে ফিরেছেন।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও একই সংখ্যক বন্দী গ্রহণের কথা নিশ্চিত করেছে।

এই বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়াটি ছিল একটি বৃহত্তর চুক্তির অংশ, যেখানে উভয় পক্ষ থেকে ১০০০ জনের বেশি বন্দী বিনিময়ের কথা রয়েছে।

ইউক্রেনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বন্দীদের বিনিময় প্রক্রিয়াটি ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে, বেলারুশ সীমান্তের কাছে সম্পন্ন হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্ত রুশ বন্দীদের চিকিৎসার জন্য বেলারুশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

যদিও বন্দি বিনিময় হয়েছে, কিন্তু যুদ্ধ এখনো চলছে।

প্রায় ১০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রন্ট লাইনে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান এই বন্দী বিনিময়কে “আস্থা-উদ্বুদ্ধকরণ ব্যবস্থা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং উভয় পক্ষ পুনরায় আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, আলোচনার পরবর্তী স্থান নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

এদিকে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, বন্দী বিনিময় সম্পন্ন হওয়ার পর রাশিয়া ইউক্রেনকে একটি খসড়া দলিল দেবে, যেখানে একটি “টেকসই, দীর্ঘমেয়াদী, এবং ব্যাপক” শান্তি চুক্তির শর্তাবলী উল্লেখ করা হবে।

ইউরোপীয় নেতারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে শান্তি আলোচনায় ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্ব করার অভিযোগ এনেছেন।

তাদের মতে, পুতিন ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করছেন।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *