কাইশুর রন্ধনশালায় জাপানের স্বাদ: ৪ ঋতুর অভিজ্ঞতা!

জাপানের কাইশু দ্বীপে, ঋতুভিত্তিক খাবারের এক অনন্য অভিজ্ঞতা!

জাপানের কাইশু দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত মিরুকাশি স্যালন (Mirukashi Salon) -এ এখন পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। এই স্যালনটি একটি বিশেষ ধরনের খাদ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যেখানে আগত অতিথিদের জাপানি রন্ধনশৈলী এবং সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করানো হয়।

এখানে আসা পর্যটকদের জন্য ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে খাবারের ভিন্নতা বিশেষভাবে আকর্ষণীয়।

মিরুকাশি স্যালনটি পরিচালনা করেন প্রেইরি স্টুয়ার্ট-উলফ (Prairie Stuart-Wolff)। তিনি আমেরিকার মেইন থেকে জাপানে এসে এখানকার সংস্কৃতি ও রন্ধনশৈলীর প্রেমে পড়েন।

পরবর্তীতে তিনি জাপানি ভাষা ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। এখন তিনি তাঁর এই জ্ঞান ব্যবহার করে অতিথিদের জাপানি রান্নার পদ্ধতি শেখান। তাঁর সাথে এই কাজে সবসময় সহযোগিতা করেন তাঁর স্ত্রী, ১৪তম প্রজন্মের মৃৎশিল্পী হানাকো নাকাজাতো (Hanako Nakazato)।

এই পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে, অতিথিরা জাপানের বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরির কৌশল শেখেন।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – তেমারি সুশি (Temari Sushi)। এছাড়াও তারা স্থানীয় বাজার থেকে তাজা উপকরণ সংগ্রহ করেন। স্থানীয় কারিগর এবং খাদ্য প্রস্তুতকারকদের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পান।

মার্চ মাসে, যখন জাপানে চেরি ফুলের মৌসুম শুরু হয়, তখন এখানকার দৃশ্য মন মুগ্ধকর হয়ে ওঠে। পর্যটকদের জন্য এটি একটি বিশেষ আকর্ষণ।

এখানকার প্রশিক্ষণে আসা অতিথিদের “হনামি” (Hanami) নামক একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যায়।

হোনামি হলো চেরি ফুলের নিচে বসে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা।

এখানে সুস্বাদু ড্যাশি (Dashi) তৈরির প্রক্রিয়া শেখানো হয়।

ড্যাশি হলো জাপানি রান্নার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা কোম্বু (Kombu) এবং কাতসুওবুশি (Katsuobushi) দিয়ে তৈরি করা হয়।

কোম্বু হলো এক প্রকারের সামুদ্রিক শৈবাল, যা হোক্কাইডো (Hokkaido) থেকে আসে। আর কাতসুওবুশি তৈরি হয় শুকনো বোনিতো মাছ থেকে, যা কাগoshima-তে (Kagoshima) উৎপাদিত হয়।

অতিথিরা এখানে সুস্বাদু খাবার তৈরি করার পাশাপাশি, বিভিন্ন ধরনের উপকরণ সংগ্রহ করতে স্থানীয় বাজারে যান।

তারা “তসুকি” (Tsukushi) এবং “ওয়ারাবি” (Warabi) -এর মতো স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে খাবার তৈরি করা শেখেন।

এছাড়াও, তারা ইটোশিমা শহরের পুরনো “সাকে” (Sake) দোকান থেকে “নামাজাকে” (Namazake), যাuncpasteurized sake নামে পরিচিত, তার স্বাদ গ্রহণ করেন।

এখানে, হানাকো নাকাজাতোর নিজস্ব মৃৎশিল্প স্টুডিও, “মনোহানাকো” (Monohanako)-র তৈরি করা সুন্দর পাত্রে খাবার পরিবেশন করা হয়।

জাপানি রন্ধনশৈলীতে খাবারের স্বাদের মতোই পরিবেশনার সৌন্দর্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমানে, স্যালনটি নাকাজাতোর পরিবারের বাসভবনে অবস্থিত।

তবে নতুন একটি স্থান তৈরি করা হয়েছে, যা রাইস হার্ভেস্ট সিজনে (October) খোলা হয়। নতুন এই স্থানে একটি খোলা রান্নাঘর এবং একটি বড় আকারের টেবিল রয়েছে।

এছাড়াও, এখানে একটি সবজির বাগান তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।

মিরুকাশি স্যালন-এর চার রাতের প্যাকেজের খরচ জনপ্রতি প্রায় ৩,৫৫০ মার্কিন ডলার (বর্তমান বাজার মূল্যে প্রায় ৩৮৭,০০০ টাকার বেশি)।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল + লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *