বৈশ্বিক জলবায়ুর একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটেছে। প্রশান্ত মহাসাগরের ‘লা নিনা’ (La Niña) নামক আবহাওয়াগত প্রভাবের সমাপ্তি ঘটেছে, যার ফলে বিশ্ব এখন একটি নিরপেক্ষ দশার দিকে যাচ্ছে।
এই পরিবর্তনের ফলে সারা বিশ্বের আবহাওয়ার ধরনে কেমন প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে আবহাওয়াবিদদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। এর কারণ, লা নিনার বিদায়ের পর আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া আগের চেয়ে কঠিন হয়ে পড়বে।
সাধারণভাবে, লা নিনা এবং এর বিপরীত অবস্থা ‘এল নিনো’ (El Niño) পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়ায় সুস্পষ্ট প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, লা নিনার কারণে আটলান্টিক মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম আরও সক্রিয় হতে দেখা যায়।
অন্যদিকে এল নিনো সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা কমিয়ে দেয়। তবে, বর্তমানে এই দুটি প্রভাবকের অনুপস্থিতিতে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA)-এর তথ্য অনুযায়ী, এখন গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত এই নিরপেক্ষ অবস্থা বজায় থাকবে। এই পরিস্থিতিতে, আসন্ন গ্রীষ্মকালে যুক্তরাষ্ট্রের তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের ধরন কেমন হবে, তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন।
তবে, আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন, উষ্ণতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। যেহেতু সমুদ্র ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়, তাই ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের শুরুতে সমুদ্রের তাপমাত্রা ছিল রেকর্ড পরিমাণে বেশি।
এর ফলে, ভবিষ্যতে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বাড়তে পারে।
এই পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপরও কিছু প্রভাব পড়তে পারে। যদিও সরাসরি সম্পর্ক নাও থাকতে পারে, তবে বৈশ্বিক আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশের বর্ষা মৌসুম এবং ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।
যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা, তাই এর প্রভাব থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়।
আবহাওয়াবিদ মিশেল ল’হিউরক্স (Michelle L’Heureux), যিনি ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত, বলেছেন, লা নিনার প্রভাব কতদিন থাকবে, তা বলা কঠিন। তাই, সামনের দিনগুলোতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস তৈরি করতে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন