যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য: ইইউ-এর দিকে ঝুঁকছে লেবার, আলোচনা জোরদার!

শিরোনাম: যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য নীতি: ইইউ-এর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান, ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাব

যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির সংসদ সদস্যরা দেশটির সরকারকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির চেয়ে ইইউ-এর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হলে দ্রুত অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য বাজারেও উচ্চ হারে শুল্ক বিদ্যমান।

যদিও পরবর্তীতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট অন্যান্য দেশের ওপর শুল্ক কিছুটা কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন, তবে গাড়ি, ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম-এর মতো কিছু পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে।

লেবার পার্টির সংসদ সদস্যদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির চেয়ে ইইউ-এর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা বেশি জরুরি। তাঁদের ভাষ্যমতে, ইইউ-এর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সম্পর্ক অনেক বড় এবং ঘনিষ্ঠ।

তাই তাঁরা চান, সরকার যেন এই দিকে বেশি মনোযোগ দেয়। লেবার পার্টির এমপি স্টেলা ক্রিজি বলেছেন, “ইউরোপের সঙ্গে একটি চুক্তি করুন। লাল রেখা (বাণিজ্য সংক্রান্ত জটিলতা) নিয়ে কথা বলা বন্ধ করুন। আমরা প্রমাণ করেছি যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইউরোপের সঙ্গে কাজ করতে পারি। আমাদের অর্থনীতি একে অপরের সঙ্গে জড়িত।”

যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য নীতি নিয়ে আলোচনা চলছে এমন সময়, দেশটির প্রাক্তন মন্ত্রী হ্যারিয়েট হারমান বলেন, “ট্রাম্পের এই নীতি ভুল এবং আমরা তাঁর সঙ্গে একমত নই।”

তিনি আরও বলেন, সরকারের উচিত হবে দেশটির জনগণকে এই কঠিন পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো এবং ট্রাম্পের নীতির কারণে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, সেটি মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেওয়া।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সম্ভবত ১০ শতাংশের নিচে শুল্ক কমাতে রাজি হবেন না, যদি না কোনো অসাধারণ চুক্তি হয়।”

এই পরিস্থিতিতে, লেবার পার্টির নেতারা মনে করেন, ইইউ-এর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নত করা হলে তা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।

তাঁরা বিশ্বাস করেন, শুল্ক কমানোর মাধ্যমে ইইউ-এর সঙ্গে বাণিজ্য বাধা দূর করা গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের সরকারও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি, বাণিজ্যমন্ত্রী ডগলাস আলেকজান্ডার চীনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার জন্য বেইজিং সফর করেছেন।

এছাড়া, ভারত সরকারের সঙ্গেও একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের চেষ্টা চলছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের জন্য একটি সুসংহত বাণিজ্য কৌশল গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *