ছোট্ট পুতুল, বিশাল কান্ড! লাবুবু’র জাদু!

বিশ্বজুড়ে ল্যাবু নামের এক ধরণের খেলনা পুতুলের উন্মাদনা এখন তুঙ্গে। অনেকটা আমাদের দেশের জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের খেলোয়াড়দের কার্ডের মতো, এই পুতুলগুলোও এখন সংগ্রাহকদের কাছে মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়েছে।

চীনের পপ মার্ট নামক একটি কোম্পানির তৈরি করা এই পুতুলগুলো তাদের “ব্লাইন্ড বক্স” ধারণার মাধ্যমে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ব্লাইন্ড বক্সের ভেতরে কী ধরণের ল্যাবু আছে, তা জানার কোনও উপায় থাকে না, যতক্ষণ না বাক্সটি খোলা হচ্ছে।

পপ মার্টের ব্যবসার হিসাব দেখলে এই উন্মাদনার প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০২৪ সালে, কোম্পানিটি ১৮০ কোটি ডলারেরও বেশি রাজস্ব আয় করেছে, যার মধ্যে চীনের বাইরের বাজার থেকে এসেছে ৪২ কোটি ডলার।

এই বিশাল অর্জনের পেছনে ল্যাবু পুতুলের বিক্রি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। মূলত, আকর্ষণীয় ডিজাইন আর সীমিত সংখ্যক উৎপাদিত হওয়ার কারণে এর চাহিদা বাড়ছে হু হু করে। বিশেষ করে, সংগ্রাহকদের কাছে “সিক্রেট” ল্যাবু খুবই দুর্লভ, যা সহজে পাওয়া যায় না।

একটি “সিক্রেট” ল্যাবু সংগ্রহ করতে কত খরচ হতে পারে? হিসাব বলছে, একজন সংগ্রাহককে প্রায় ২,০০০ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করতে হতে পারে।

সিএনএন-এর একটি সিমুলেশন থেকে জানা যায়, ভাগ্যবান ক্রেতাদের একজন পেতে কয়েকবার কেনার প্রয়োজন হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে, একটি দুর্লভ ল্যাবু পেতে কয়েক ডজন এমনকি কয়েকশ’ বার পর্যন্ত বাক্স কিনতে হয়েছে।

পুতুলগুলোর চাহিদা এতটাই বেশি যে, পপ মার্টের নিজস্ব অনলাইন ও খুচরা দোকানগুলোতে সবসময় পণ্য মজুত থাকে না। তাদের ওয়েবসাইটে “দ্য মনস্টার্স” সিরিজের প্রায় ১০০টির বেশি পণ্য তালিকাভুক্ত আছে, কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, হাতে গোনা কয়েকটি খেলনা দোকানে পাওয়া যাচ্ছে।

এই সীমাবদ্ধতাও সম্ভবত এই খেলনাগুলোর জনপ্রিয়তার একটি কারণ।

অনলাইন বাজারে ল্যাবু পুতুলের চাহিদা ব্যাপক। ইবে-এর মতো ওয়েবসাইটে ১৯,০০০-এর বেশি ল্যাবু পণ্য তালিকাভুক্ত রয়েছে, যেখানে অনেকগুলোর দাম পপ মার্টের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি।

গুগলের ট্রেন্ডস অনুসারে, গত এক বছরে বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাদা, টেক্সাস এবং হাওয়াইয়ে ল্যাবু নিয়ে অনলাইনে আগ্রহ বেড়েছে।

ল্যাবু পুতুলের এই উন্মাদনা একদিকে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি এটি বাজার অর্থনীতির একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। সীমিত সরবরাহ, আকর্ষনীয় ডিজাইন, এবং অজানা রহস্যের মিশ্রণে এই খেলনাগুলো সংগ্রাহকদের কাছে মূল্যবান হয়ে উঠেছে।

ভবিষ্যতে, এই ধরনের খেলনাগুলোর জনপ্রিয়তা আরও বাড়তে পারে, যা বাণিজ্যিকভাবে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *