ঐতিহাসিক এক আবিষ্কার! মিশিগান হ্রদে এক শতাব্দীর পুরনো জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেলেন মৎস্যজীবী।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান হ্রদে এক বিস্ময়কর ঘটনার সাক্ষী! এক শতাব্দীরও বেশি সময় আগে হ্রদের গভীরে হারিয়ে যাওয়া একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন এক মৎস্যজীবী। ক্রিস্টোফার থাস নামের ওই ব্যক্তি সোনার যন্ত্রের (শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে গভীরতা মাপার যন্ত্র) মাধ্যমে গত ১৩ই মে তারিখে বিশাল এই জলযানের সন্ধান পান।
জানা গেছে, খুঁজে পাওয়া জাহাজটির নাম ‘জে.সি. এমস’। ১৮৮১ সালে এটি তৈরি করা হয়েছিল এবং মূলত কাঠ ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত হতো। প্রায় ৪৯ মিটার (১৬০ ফুট) দীর্ঘ এই জাহাজটি একসময় হ্রদের বুকে দাপটের সঙ্গে চলত। পরবর্তীতে, ১৯২৩ সালে এটিকে ইচ্ছাকৃতভাবে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে, এটি মাত্র প্রায় ২.৭ মিটার (৯ ফুট) গভীরতায় রয়েছে।
এই আবিষ্কারের ফলে, হারিয়ে যাওয়া এক ইতিহাসের দুয়ার আবার উন্মোচন হয়েছে। উইসকনসিন ঐতিহাসিক সোসাইটির গবেষণা সমন্বয়কারী ক্যাটলিন জ্যান্ট জানিয়েছেন, “এই আকারের অন্য কোনো টাগবোট (ছোট আকারের শক্তিশালী জাহাজ যা অন্য জাহাজকে টেনে নিতে পারে) আমাদের সংগ্রহে নেই।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই আবিষ্কারের ফলে আমেরিকার নৌ-ঐতিহ্য সম্পর্কে আরও নতুন তথ্য পাওয়া যাবে। ক্রিস্টোফার থাস নিজেও তার পরিবারের ঐতিহ্য অনুসরণ করে এই ধরনের ঐতিহাসিক ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার কাজে জড়িত ছিলেন। তার পরিবারের সদস্য ‘শিপরেক সুজে’ জনসন এর আগেও বেশ কয়েকটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করে স্থানীয়ভাবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
উইসকনসিন আন্ডারওয়াটার আর্কিওলজি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ব্রেন্ডন বেইলড এবং ঐতিহাসিক সোসাইটির মেরিটাইম আর্কিওলজিস্ট টামারা থমসন এই ধ্বংসাবশেষ সনাক্ত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, এককালে ‘জে.সি. এমস’ হ্রদের বুকে অন্যতম শক্তিশালী একটি টাগবোট ছিল। এক সময় এটির নির্মাণ খরচ ছিল প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।
ঐতিহাসিকরা এই ধ্বংসাবশেষটিকে ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তারা জলদস্যুদের এই ধ্বংসাবশেষ থেকে কোনো প্রকার জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে নিষেধ করেছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল