ভূমধ্যসাগরে মর্মান্তিক: লাম্পেদুসায় নৌকাডুবিতে নিহত ৬, নিখোঁজ ৪০!

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত ৬, নিখোঁজ ৪০।

ইতালির ল্যাম্পেদুসা দ্বীপের কাছে এক ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এখনো প্রায় ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ইতালীয় কোস্টগার্ড একটি অর্ধ-ডুবা ডিঙি শনাক্ত করে এবং সেখান থেকে ১০ জন অভিবাসীকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। বুধবার সকালে জীবিতদের উদ্ধারের জন্য পুনরায় অভিযান শুরু করা হয়েছে।

বিভিন্ন ইতালীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, নৌকাটিতে আনুমানিক ৫৬ জন আরোহী ছিলেন। তারা তিউনিসিয়ার স্ফ্যাক্স থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে নৌকাটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়।

তাদের মধ্যে অনেকেই সাগরে পড়ে যান।

দুর্ঘটনায় নিহত ছয় জনের মরদেহ ল্যাম্পেদুসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ১০ জনের মধ্যে ছয়জন পুরুষ এবং চারজন নারী ছিলেন। তাদের দ্বীপের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

ক্যাথলিক চার্চের দাতব্য সংস্থা কারিতাসের ইতালীয় শাখার পরিচালক ফাদার মার্কো পাগনিয়েল্লো এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, “যারা একটি উন্নত জীবনের প্রত্যাশা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন, ভূমধ্যসাগরে তাদের মৃত্যু আমাদের ভবিষ্যৎকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।

যুদ্ধের ভয়াবহতা যখন শান্তির সম্ভাবনাকে ম্লান করে দিচ্ছে, তখন সবার, বিশেষ করে যারা জনগণের কল্যাণে কাজ করার দায়িত্বে আছেন, তাদের উচিত নিজেদের ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া মানুষদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়ানো। আমরা এই ধরনেরtragic ঘটনার সঙ্গে অভ্যস্ত হতে পারি না।”

উল্লেখ্য, উত্তর আফ্রিকা থেকে আসা শরণার্থীরা উন্নত জীবনের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে আশ্রয় নিতে চেষ্টা করে।

সম্প্রতি, ইতালিতে অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে জানুয়ারি মাসেই এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে গত বছর একই সময়ে ২,২৫৮ জন অভিবাসী ইতালিতে প্রবেশ করেছিল, সেখানে চলতি বছর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৩৬৮ জনে।

এই মাসের শেষের দিকে আসা অভিবাসীদের অধিকাংশই লিবিয়া থেকে এসেছিলেন।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) হিসাব অনুযায়ী, শুধু জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় অন্তত ২৪৮ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়া, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে এই সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার সময় প্রায় ২,৩০০ জন হয় মারা গিয়েছেন, না হয় নিখোঁজ হয়েছেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *