ডেনমার্কের বিতর্কিত চলচ্চিত্র নির্মাতা লার্স ভন ট্রিয়ারের কাজের উপর ভিত্তি করে কোপেনহেগেনে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। “ব্রেকিং ডার্কনেস” শিরোনামের এই প্রদর্শনীতে ট্রিয়ারের সিনেমার বিভিন্ন দৃশ্য ও বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা হয়েছে, যা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
তবে, এই প্রদর্শনীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পরিচালক লার্স ভন ট্রিয়ারের বিতর্কিত অতীত এবং তাঁর কাজের সমালোচনার বিষয়টিও।
প্রদর্শনীটিতে ট্রিয়ারের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র – *মেলানকোলিয়া*, *ইউরোপা*, *ড্যান্সার ইন দ্য ডার্ক*, *ব্রেকিং দ্য ওয়েভস* এবং *ডগভিলে*-এর দৃশ্য ও আবহ তৈরি করা হয়েছে। দর্শকদের জন্য সিনেমার জগৎটিকে নতুন করে অনুভব করার সুযোগ রয়েছে এখানে।
প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে সিনেমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকরণও, যেমন *ডগভিলে*-এ নিকোল কিডম্যানের পরা কোট এবং *মেলানকোলিয়া*-তে অভিনেত্রী কার্স্টেন ডান্সটের পরা বিয়ের পোশাক।
তবে, এই প্রদর্শনীর একটি বিশেষ দিক হলো লার্স ভন ট্রিয়ারের কাজের সমালোচনামূলক মূল্যায়ন। ডেনিশ শিল্পী সোফি রিউস নর্স, যিনি নারীবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে লেখালেখি করেন, তিনি ট্রিয়ারের ছবিতে নারী চরিত্র চিত্রণের সমালোচনা করেছেন।
তাঁর মতে, ট্রিয়ারের সিনেমায় নারীদের উপস্থাপন “পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিচ্ছবি”, যেখানে নারী চরিত্রগুলো প্রায়ই পুরুষের কল্পনার প্রতিরূপ হিসেবে দেখা যায়। রিউস নর্স এই প্রদর্শনীতে একটি কমিক স্ট্রিপের মাধ্যমে ট্রিয়ারের কাজের সমালোচনা করেছেন, যা দর্শকদের মধ্যে আলোচনা তৈরি করেছে।
লার্স ভন ট্রিয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত একজন ব্যক্তিত্ব। ২০১১ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য তিনি সমালোচিত হয়েছিলেন।
এছাড়াও, অভিনেত্রী বিয়র্কের সঙ্গে তাঁর কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে। এই সমস্ত বিতর্ক সত্ত্বেও, প্রদর্শনীটি তরুণ প্রজন্মের দর্শকদেরও আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রদর্শনী কর্তৃপক্ষ মনে করেন, ট্রিয়ারের কাজের নান্দনিকতা এবং তাঁর সিনেমায় প্রেম, ঘৃণা, ভালো-মন্দ এবং মানুষের choix-এর মতো বিষয়গুলো দর্শকদের আকৃষ্ট করে।
প্রদর্শনীটির প্রধান কিউরেটর হেলেন নিউবার্গ বে। তিনি জানান, এই প্রদর্শনী দর্শকদের মধ্যে আলোচনা এবং বিতর্কের জন্ম দেবে। তাঁর মতে, ট্রিয়ারের কাজ এখনও প্রাসঙ্গিক, কারণ তিনি মানুষের জীবনের গভীর বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছেন।
প্রদর্শনীটি আগামী ২৭শে জুলাই পর্যন্ত কোপেনহেগেনের নিকোলাই কুন্সথালে চলবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান