কান্নাভেজা কণ্ঠে খুনি: ৪ বছরের শিশুর হত্যাকান্ডে যাবজ্জীবন!

যুক্তরাষ্ট্রে এক মর্মান্তিক ঘটনায়, ৪ বছর বয়সী অটিজম আক্রান্ত শিশুকে হত্যার দায়ে ক্রিস্টাল স্টিফেন্স নামের এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে লাস ভেগাসে ঘটে যাওয়া এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য ৪৮ বছর বয়সী স্টিফেন্সকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

বিচারক মিশেল লেভিট এই রায় ঘোষণা করেন। খবরে প্রকাশ, স্টিফেন্স প্রথমে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

কিন্তু পরে তিনি প্রথম-ডিগ্রি হত্যা, গুরুতর শারীরিক ক্ষতির উদ্দেশ্যে অপহরণ এবং শিশু নির্যাতনের অভিযোগ স্বীকার করেন। এর ফলে তাকে মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে রেহাই দেওয়া হয়।

আদালতে শুনানিকালে প্রধান ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ক্রিস্টোফার হামনার এই মামলাটিকে ‘একটি ভয়াবহ শিশু হত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, শিশুদের ওপর হওয়া এমন নৃশংসতা আমি আগে দেখিনি।’

২০১৮ সালের ৩০শে জুলাই, শিশুটিকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

তদন্তে জানা যায়, শিশুটির শরীরে ভাঙা হাড়, ক্ষত, ফুসফুসে গুরুতর আঘাত এবং অপুষ্টির চিহ্ন ছিল। এমনকি শরীরে ইঁদুরের কামড়েরও প্রমাণ মিলেছে।

আদালতের নথি অনুযায়ী, স্টিফেন্স শুরুতে দাবি করেছিলেন যে তিনি শিশুটির এবং তার বোনের দেখাশোনা করছিলেন। কিন্তু পরে তার ঘর থেকে মাদকদ্রব্য এবং মাদক সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

পুলিশকে খবর দেওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, শিশুটি সম্ভবত পানিতে ডুবে গিয়েছিল। এই ঘটনার আগে, শিশুটির পরিবার সম্পর্কে উদ্বেগের কারণে চাইল্ড প্রোটেক্টিভ সার্ভিসেস-এর (Child Protective Services) কাছে পাঁচবার অভিযোগ জমা পড়েছিল।

যদিও প্রতিটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হলেও, সেগুলোর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রায়ের সময় স্টিফেন্স তার কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ক্ষমা চান।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার জঘন্য কাজের জন্য গভীরভাবে দুঃখিত।’ শিশুটির বাবা, ব্রান্ডন স্টেকলার সিনিয়র, তার ছেলেকে ‘টুকু’ (Tuku) এবং ‘হ্যাপি ফিট’ নামে ডাকতেন।

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে সবসময় আমার হৃদয়ে থাকবে, আমি তার গল্প মৃত্যুর পরও বলে যাবো।’ শিশুটির মা সিন্থিয়া মোসলে আদালতের কাছে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, স্টিফেন্স তার কৃতকর্মের ফল প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করবেন, কারণ আমরা প্রতি মুহূর্তে সেই কষ্ট অনুভব করছি।’ যদি কোনো শিশুর প্রতি নির্যাতনের সন্দেহ হয়, তাহলে দ্রুত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *