মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অন্দরে ‘অবাধ্য’ কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করার মিশনে নেমেছেন বিতর্কিত ডানপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট লরা লুমের।
ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ট্রাম্পের দলবদলের ইতিহাসে লুমারের এই ভূমিকা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, লুমের সরাসরি ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তার পছন্দের কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাব বিস্তার করছেন।
সম্প্রতি, লুমারের সমালোচনার জেরে দেশটির খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ)-এর শীর্ষ এক কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করতে হয়।
এছাড়া, জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা এবং সামরিক একাডেমির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার পেছনেও লুমারের হাত ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
লুমারের এই কর্মকাণ্ডকে ওয়াশিংটনে ‘লুমেরড’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
লুমারের সমালোচকরা বলছেন, তিনি মূলত ট্রাম্পের প্রতি অনুগত কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে কাজ করেন।
যাদের বিরুদ্ধে সামান্যতম ‘অবাধ্যতা’র প্রমাণ পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালান এবং হোয়াইট হাউসে খবর পাঠান।
এর ফলে, অনেক সময় কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে হয়।
তবে, লুমেরের দাবি, তিনি ট্রাম্পের প্রতি বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করতে চান এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করছেন।
লুমারের সমালোচনার শিকার হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি, কৃষি বিষয়ক মন্ত্রী ব্রুক রোলিন্স এবং স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিভাগের কর্মকর্তারা।
যদিও, এদের কারও পদ এখনই যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, কারণ ট্রাম্প তাদের সমর্থন করেন।
তবে, লুমেরের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
কেউ কেউ মনে করেন, লুমেরের তৎপরতা প্রশাসনের জন্য ক্ষতিকর।
আবার, কেউ কেউ মনে করেন, এর মাধ্যমে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে আনুগত্যের বিষয়টি আরও জোরালো হবে।
লুমের অবশ্য মনে করেন, তিনি যদি সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারতেন, তাহলে এই ধরনের সমস্যাগুলো এড়ানো যেত।
ট্রাম্পের উপদেষ্টারা লুমারের কর্মকাণ্ডকে সবসময় উৎসাহিত করেন না।
তারা মনে করেন, লুমেরের বিতর্কিত মন্তব্য এবং বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রশাসনের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
যদিও, ট্রাম্প লুমেরকে একজন ‘দেশপ্রেমিক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, লুমারের এই ভূমিকা ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
কারণ, লুমেরের সমালোচনার জেরে অনেক যোগ্য কর্মকর্তাকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, আবার অনেক সময় পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এর ফলে প্রশাসনের কার্যকারিতা কমে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন