ফ্রান্সের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করে ন্যাশনাল র্যালি (RN)-এর নেত্রী মারিন লে পেনের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এই মামলায় তাকে কারাদণ্ড, জরিমানা এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
এই ঘটনার জেরে ফ্রান্সে রাজনৈতিক বিভেদ আরও তীব্র হয়েছে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
মারিন লে পেন, যিনি ফ্রান্সে একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ এবং আগামী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিলেন, তাকে ৪ মিলিয়নের বেশি ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার বেশি) সরকারি অর্থ আত্মসাতের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
এই অর্থ তিনি তার দলের কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ। আদালত তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়, যার মধ্যে দুই বছর স্থগিত করা হয়েছে।
এছাড়াও, তাকে এক লক্ষ ইউরো জরিমানা করা হয়েছে এবং পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এই রায় ঘোষণার পরপরই লে পেন একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি তার সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এই রায়ের মাধ্যমে তার সম্মান, দেশ এবং জনগণের অধিকার খর্ব করা হয়েছে।
প্যারিসে তার সমর্থকেরা এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করে, যেখানে লে পেন এই রায়কে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করেন।
অন্যদিকে, বামপন্থী দলগুলো এই রায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
তারা লে পেনের এই পদক্ষেপকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের প্রতি সরাসরি আঘাত হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তাদের মতে, লে পেন সাধারণ মানুষের জন্য এক ধরনের কঠোর বিচার চান, কিন্তু নিজের জন্য ছাড় পেতে চান।
এই বিতর্কের মধ্যে ফ্রান্সের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং এই মামলার রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মামলার রায় ফ্রান্সের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
বিশেষ করে, আগামী ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মারিন লে পেনের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, যদি না তিনি আপিল করে এই রায় পরিবর্তন করতে পারেন।
ফ্রান্সের এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও কিছুটা প্রভাবিত করতে পারে।
কারণ, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং রাজনৈতিক নেতাদের অভিযুক্ত হওয়ার মতো ঘটনা বিভিন্ন দেশে প্রায়ই দেখা যায়।
এই ধরনের ঘটনাগুলো আইনের শাসন, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার গুরুত্ব আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান