ছোট্ট হেনরির জন্মদিন আসন্ন। ছয় বছরে পা দিতে চলা এই শিশুর একটি বিশেষ আবদার ছিল— জন্মদিনের কেকটি হতে হবে লেগো থিমের। কিন্তু মায়ের পক্ষে এতটুকু জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়েছিল। কারণ? মা লরেন বুখবাউয়ার সম্প্রতি আহত হয়েছেন, পিঠে চোট পাওয়ার কারণে চলাফেরারও অসুবিধা।
এমন অবস্থায়, ছেলের জন্মদিনের কেক নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি।
ছোট্ট হেনরি একজন বিশেষ শিশু। সে অটিজম এবং এডিএইচডি-তে আক্রান্ত। কথা বলার জন্য সে একটি আইপ্যাডের সাহায্য নেয়, যেখানে বিভিন্ন চিহ্নের মাধ্যমে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে। লেগো তার খুব পছন্দের একটি জিনিস।
একবার সে একটি লেগো কেকের ছবি দেখে বায়না ধরেছিল, জন্মদিনে তেমন একটি কেক চাই।
লরেন স্থানীয় একটি ফেসবুক গ্রুপে সাহায্য চেয়ে পোস্ট করেন। তিনি তার সমস্যার কথা জানান এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি কেক দরকার বলেও উল্লেখ করেন। তার এই পোস্টে প্রচুর মানুষ সাড়া দেন।
স্থানীয় বেকারি এবং পরিচিত বেকারদেরকে ট্যাগ করা হয়। সবাই যেন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত।
এই পোস্টের মাধ্যমেই যেন এক অলৌকিক ঘটনার সূচনা হলো। হেদার মরগান নামে এক নারীর ১১ বছর বয়সী মেয়ে শার্লট, যিনি একজন শৌখিন বেকার, এগিয়ে আসেন।
শার্লট এর আগে চমৎকার কিছু কেক তৈরি করেছে, যার ছবি দেখে মুগ্ধ হওয়ার মতো। হেদার জানান, তার মেয়ে বিনামূল্যে হেনরির জন্য একটি কেক তৈরি করতে রাজি।
লরেন জানান, “আমি শার্লটের মায়ের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করি। শার্লট এর আগে তৈরি করা কেকের ছবি দেখালে হেনরি খুব খুশি হয়েছিল। সে তার কথা বলার যন্ত্রের মাধ্যমে জানায়, ‘হ্যাঁ, লেগো কেক’।
এরপর প্রতিদিন আমরা কেকটি নিয়ে কথা বলতাম, হেনরি খুব উত্তেজিত ছিল।
কেক তৈরির জন্য শার্লট হাতে পায় এক সপ্তাহের কম সময়। মা হেদার জানান, শার্লট মূলত অনলাইন টিউটোরিয়াল দেখে কেক তৈরি করা শিখেছে। কোনো ডিজাইন পছন্দ হলে, সে প্রথমে চেষ্টা করে, না হলে অন্য পথে হাঁটে।
শার্লটের তৈরি করা কেকটি ছিল পাঁচ পাউন্ডের বেশি ওজনের। বাটারক্রিম এবং লেগো দিয়ে সুসজ্জিত কেকটি দেখতে অবিকল লরেনের কল্পনার মতোই হয়েছিল।
শার্লট এবং তার মা, হেনরির জন্মদিনের ঠিক আগে কেকটি বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসে।
লরেন বলেন, “বাচ্চাদের মানুষ করতে একটা গ্রামের প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে যখন তাদের কিছু বাড়তি চাহিদা থাকে। আমার মনে হয়, যাদের কোনো শারীরিক সমস্যা নেই, তারাও মাঝে মাঝে সাহায্য চাইতে দ্বিধা বোধ করে।
আমি খুব খুশি যে আমরা সাহায্য চেয়েছিলাম, কারণ এর থেকে ভালো কিছু হতে পারত না। আমি জানি, হেনরির জন্মদিনটা দারুণ কেটেছিল। সে সারাদিন অনেক খুশি ছিল।”
মা ও মেয়ের এই ভালোবাসার গল্পে সমাজের অনেক মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। ভবিষ্যতে শার্লট সম্ভবত কেকের অর্ডার নেওয়া শুরু করতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল