শিরোনাম: পরিত্যক্ত সামগ্রী থেকে শিল্পের জন্ম: ঐক্যের বার্তা নিয়ে শিল্পী লেইলাহ বাবিরিয়ে
নিউ ইয়র্ক ও উগান্ডার শিল্পী লেইলাহ বাবিরিয়ে-এর কাজে সমাজের বর্জিত জিনিসের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে। তাঁর শিল্পকর্ম যেন সমাজের প্রান্তিক মানুষের প্রতিচ্ছবি, যারা প্রায়শই উপেক্ষিত হন।
ফেলে দেওয়া লোহা, তার, ভাঙা সাইকেলের যন্ত্রাংশ—এসবই বাবিরিয়ের হাতে নতুন জীবন পায়, জন্ম নেয় অসাধারণ সব ভাস্কর্যের। এই ভাস্কর্যগুলো শুধু নান্দনিকতাই যোগ করে না, বরং সমাজে ঐক্য ও সহানুভূতির বার্তা পৌঁছে দেয়।
লেইলাহ বাবিরিয়ে-এর জন্ম উগান্ডায়। তাঁর শিল্পের অনুপ্রেরণা আসে নিজের জীবন ও অভিজ্ঞাতা থেকে। উগান্ডায় সমকামিতা এখনো অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
২০১৩ সালে, যখন সরকার সমকামিতার বিরুদ্ধে কঠোর আইন পাস করে, তখন বাবিরিয়েকে তাঁর পরিচয় প্রকাশের জন্য সেখানকার সংবাদ মাধ্যমে আক্রমণ করা হয়। জীবন বাঁচাতে তিনি পালিয়ে আমেরিকায় আশ্রয় নেন।
বাবিরিয়ের শিল্পকর্ম যেন সেই কঠিন বাস্তবতার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ। তাঁর কাজ, বিশেষ করে ‘আগালি আওয়াউ’ বা ‘একসাথে’ শিরোনামের বিশাল আকারের ভাস্কর্যগুলো, ব্রুকলিনের নদীর তীরে স্থাপন করা হয়েছিল।
সেখানে এগুলো এক ভিন্ন জগৎ তৈরি করে, যা দর্শকদের একতা ও ভালোবাসার বার্তা দেয়।
তাঁর শিল্পকর্মগুলোতে ব্যবহৃত উপকরণগুলো—পুরোনো শিকল, তার, ভাঙা যন্ত্রাংশ—যেন সমাজের চোখে গুরুত্বহীন। কিন্তু বাবিরিয়ের শিল্পী-দৃষ্টিতে এগুলোর নিজস্ব সৌন্দর্য আছে।
তিনি এই বর্জিত জিনিসগুলো ব্যবহার করে এমন সব শিল্প তৈরি করেন, যা মানুষের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। তাঁর কাজ শুধু একটি শিল্পকর্ম নয়, বরং তা সমাজে প্রান্তিক মানুষের অধিকার ও তাদের প্রতি সহানুভূতির একটি শক্তিশালী দৃষ্টান্ত।
বাস্তবিক অর্থে, বাবিরিয়ের কাজ সমাজের সেই সব মানুষের কথা বলে, যাদের কণ্ঠস্বর শোনা যায় না। তাঁর ভাস্কর্যগুলো যেন সমাজের প্রতিচ্ছবি, যা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়— সমাজের বর্জিত অংশগুলোও কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
তাঁর শিল্পকর্ম আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ঐক্যবদ্ধভাবে বাঁচতে পারলে সমাজের প্রতিটি মানুষের জীবন আরও সুন্দর হতে পারে। শিল্পী লেইলাহ বাবিরিয়ের কাজ তাই শুধু একটি শিল্পের উদাহরণ নয়, বরং সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।
তথ্য সূত্র: The Guardian