আতঙ্কে বাগানপ্রেমীরা! লেবু গাছে পোকার আক্রমণ, প্রতিকার কি?

আমাদের অনেকেরই বাড়িতে শখ করে গাছ লাগানোর অভ্যাস আছে। বারান্দা কিংবা ঘরের কোণে রাখা গাছগুলো একদিকে যেমন আমাদের মন ভালো করে, তেমনই ঘরের সৌন্দর্যও বাড়ায়।

কিন্তু মাঝে মাঝে এই শখের গাছগুলোতে পোকার আক্রমণ হয়, যা সত্যিই উদ্বেগের কারণ। সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের একটি সংবাদপত্রে ইনডোর লেবু গাছের একটি সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যেখানে গাছের পাতায় সাদা সাদা দাগ এবং আঠালো ভাবের কারণ হিসেবে ‘মিলিবাগ’ নামক এক ধরনের পোকার কথা বলা হয়েছে।

আসুন, এই সমস্যা এবং এর সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

মিলিবাগ কী? এটি আসলে এক ধরনের ছোট, নরম শরীরযুক্ত পোকা।

এরা গাছের কান্ড এবং পাতার রস শুষে নেয়, ফলে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। এদের শরীরে মোমের মতো একটি আবরণ থাকে, যার কারণে সাধারণ কীটনাশক এদের উপর তেমন কাজ করে না।

এই পোকাগুলো এক ধরনের আঠালো পদার্থ (হনিডিউ) ত্যাগ করে, যা গাছের পাতার উপর জমা হয় এবং ছত্রাকের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে।

যদি আপনার ইনডোর লেবু গাছে এমন সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। প্রথমে, একটি ভেজা কাপড় অথবা অ্যালকোহলে ভেজানো কটন বাড দিয়ে মিলিবাগ গুলোকে গাছ থেকে সরিয়ে ফেলুন।

এরপর, নিম তেল, জল এবং সামান্য ডিশ সোপ মিশিয়ে একটি স্প্রে তৈরি করুন। এই স্প্রে নিয়মিত, অর্থাৎ ৫-৭ দিন পর পর গাছে ব্যবহার করুন। এটি মিলিবাগ তাড়াতে সাহায্য করবে।

এছাড়াও, জৈবিক উপায়েও এই পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। উপকারী নেমাটোড বা লেডিবার্ডের মতো কিছু পোকা আছে, যারা মিলিবাগের ডিম ও লার্ভা ধ্বংস করে।

এর ফলে, ভবিষ্যতে পোকার উপদ্রব কম হয়।

প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত গাছের পাতা পরীক্ষা করা উচিত, বিশেষ করে পাতার নিচের দিক।

পাতাগুলো মাঝে মাঝে পরিষ্কার করুন। গাছটিকে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসপূর্ণ স্থানে রাখুন এবং অতিরিক্ত জল দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

বাংলাদেশেও বিভিন্ন গাছের পাতায় এই ধরনের পোকার আক্রমণ হতে পারে। এক্ষেত্রে, উল্লিখিত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার গাছের যত্ন নিতে পারেন।

‘মিলিবাগ’ (Mealybugs) একটি সাধারণ সমস্যা, যা প্রায় সকল ধরণের গাছের ক্ষতি করতে পারে। ‘নিম তেল’ (Neem oil) একটি প্রাকৃতিক কীটনাশক, যা স্থানীয় বাজারে সহজেই পাওয়া যায়।

‘জৈবিক কীট নিয়ন্ত্রণ’ (Biological pest control)-এর ধারণাটি হলো, ক্ষতিকর পোকা দমনের জন্য উপকারী পোকামাকড় ব্যবহার করা।

গাছ ভালো রাখতে নিয়মিত তাদের প্রতি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। আপনার বাগানের গাছগুলোকে সুস্থ রাখতে সচেতন থাকুন।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *